মৃত্যুকূপের সড়কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪

0
441

অনলাইন ডেস্কঃ
দিনের শুরুতেই মৃত্যুকৃপে পরিণত হওয়া দেশের সড়কগুলোত নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। ৮ জেলায় এসব দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। এসব ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। শুধু গাইবান্দার পলাশবাড়ীতেই নিহতের সংখ্যা ১৬ জন এবং রংপুরে ৬ জন।

শনিবার (২৩ জুন) ভোররাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

গাইবান্দা
জেলার পলাশবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল আলম জানান, ‘আলম এন্টার প্রাইজ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস পঞ্চগড়ের উদ্দেশে যাচ্ছিল। বাসটি রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পলাশবাড়ির মহেশপুর এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন। আশেপাশের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও ৭ জন মারা যান।

তিনি আরও জানান, বাকিদের পলাশবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাৎক্ষণিক হতাহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

রংপুর
তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাকি জানান, দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী একটি বিআরটিসির দ্বিতল বাসের চাকা নষ্ট হলে উপজেলার শলেয়াশাহ বাজার এলাকায় দাঁড়িয়ে মেরামতের কাজ করছিল। এ সময় পেছন থেকে একটি বালু বোঝাই ট্রাক ধাক্কা দেয় বাসটিকে। এতে ঘটনাস্থলে ৬ বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন পাঁচজন। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

নাটোর
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান ও ফায়ার সার্র্ভিসের স্টেশন অফিসার মুহিউদ্দীন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নলডাঙ্গা থেকে নাটোরগামী যাত্রী বোঝাই একটি অটোরিকশা নাটোর শহরের আলাইপুরস্থ কমলা সুপার মার্কেটের সামনে বালু ভর্তি একটি ট্রাক পেছন থেকে চাপা দিলে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচরে যায়। এতে অটোরিকশার দুই যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত ও চালকসহ অপর তিন যাত্রী আহত হয়। ট্রাক চালক ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। আহতদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এদের মধ্যে দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে টুঙ্গিপাড়া থেকে ছেড়ে আসা গোপালগঞ্জগামী একটি লোকাল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকা- খুলনা মহাসড়ক ও ঘোনাপাড়া টুঙ্গিপাড়া সড়কের মোড়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা রিকশা ভ্যান, থ্রিহুইলারসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনকে ধাক্কা দিয়ে ট্রাফিক আইল্যান্ডে উঠে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের চাপায় ২ জন নিহত হন। আহত হয়১০ জন। আহতদেরকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর কাদির জিলানী জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়া থেকে ঢাকাগামী আরকে পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস রায়গঞ্জের ভুইয়াগাতী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকের চালক ও হেলপার নিহত হন।

নিহতেরা হলেন- রায়গঞ্জ উপজেলার শ্যামনাই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ট্রাকচালক শরিফ ফকির (৩৫), একই গ্রামের ধুকু মিয়ার ছেলে হেলপার রফিকুল ইসলাম (৩০)।

ফরিদপুর
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার সাইফুজ্জামান জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সদরদি নামক এলাকায় বরিশাল থেকে রাজশাহীগামী তুহিন পরিবহন নামের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। আহত ২০ যাত্রীকে পুলিশ ও ফায়ান সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করে।

সাভা (ঢাকা)
সাভার মডেল থানার আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল জানান, রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দ্রুতি পরিবহনের একটি নৈশকোচ সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজারের তুরাগ এলাকায় এলে মহাসড়কে ইউটার্ন নেয়া একটি ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা লেগে। এতে বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ ঢাকার হাসপাতালগুলোতে পাঠায়।

এছাড়া লক্ষ্মীপুরে ২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।