মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে : জনউদ্যোগ

0
441

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোডের শতবর্ষী দুই সহগ্রাধিক গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। যশোর রোডকে চার লেনে উন্নীত করবার প্রকল্পের নামে যশোর রোডের দুই ধারে দুই হাজারের উপরে শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলবার সিদ্ধান্ত ওই অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রকৃতির প্রতি ভয়াবহ হুমকিস্বরূপ। যশোর রোড বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের আবেগের সঙ্গে জড়িত বলে এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে শুধু যশোর নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের ইতিহাস চেতনায় আঘাত করা হয়েছে । মহামান্য হাইকোর্ট ৬ মাসের যে স্থগিত আদেশ দিয়েছেন তাকে ইতিবাচক দেখে নেতৃবৃন্দ বলেন, হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করছে যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা সরকারকে বিপাকে ফেলতে চাইছে। এভাবে বললেন জনউদ্যোগ,খুলনার মানববন্ধনে নাগরিক নেতৃবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে জনউদ্যোগ,খুলনার উদ্যোগে ইতিহাসের স্বাক্ষী যশোর রোডের শতবর্ষী কাটার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ,খুলনা আহবায়ক এ্যাড: কুদরত-ই-খুদা। সভা পরিচালনা করেন জনউদ্যোগ,খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: আ ফ ম মহসিন, মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ মোড়ল, অধ্যক্ষ মো: তারিকুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পাটির মফিদুল ইসলাম, সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু, আয়কর আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি এস এম শাহনওয়াজ আলী, মাসাসের নির্বাহী পরিচালক এ্যাড: শামীমা সুলতানা শীলু, খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, বেলার সমন্বয়কারি মাহাফুজুর রহমান মুকুল, এ্যাড: জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী, জাপার শাহ লায়েকুল্লাহ, আমরা খুলনাবাসীর মাহাবুবুর রহমান খোকন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের এম এ কাশেম শেখ আব্দুল হালিম, এস এম দেলোয়ার, উন্নয়ন নেতা আফজাল হোসেন রাজু, সুজনের ডা: মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, ছায়াবৃক্ষের মাহাবুব আলম বাদশা, রূপসা সংস্থার হিরন্ময় মন্ডল, সেফের দিপক কুমার দে, প্রশিকার অজয় দে, বাকের আহমেদ, নান্দিক একাডেমীর জেসমিন আরা, মহিলা পরিষদের আলমাস আরা, শেখ আইনুল হক, সাংবাদিক খলিলুর রহমান সুমন, পরিবর্তনের ছবি রহমান, ওয়াহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কে এম মোস্তফা কামাল, এম এম শরিফুল ইসলাম, কামরান হাসান মন্টু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, শতবর্ষী গাছগুলো স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত। আমাদের উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করে। ২ হাজার ৩১২টি গাছ কেটে মহাসড়ক চার লেন করার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। যাঁরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিশেষ মতলব রয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্ত পরিবেশবিরোধী শুধু নয়, গণবিরোধীও।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সারা পৃথিবীতে দুই পাশের গাছ রক্ষা করে কিংবা গাছকে রাস্তা বিভাজক হিসেবে ব্যবহার করে সড়কের প্রস্থ বৃদ্ধির উদাহরণ প্রচুর। এমনকি যশোর রোডের ভারত অংশেও এই প্রক্রিয়ায় রাস্তা পার্শ¦বর্তী বৃক্ষসারি রক্ষা করা হয়েছে। এমন উদাহরণ চোখের সামনেই থাকবার পরেও সুন্দরবনের প্রায় চার ভাগের একভাগ পরিমাণ বৃক্ষ নিধনের এই বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত আমাদের প্রশাসনের গণবিরোধী মনোভাবেরই প্রকাশ ।
নেতৃবৃন্দ সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গাছ রেখে চার লাইনে প্রশস্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবার আহবান জানান।