মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্টের উদ্বেগ

0
165

টাইমস ডেস্ক: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ‘মারকাযুল কুরআন ইসলামিক অ্যাকাডেমি’ মাদ্রাসার আবাসিক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই শিশুর নিরাপত্তা ও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও মাদ্রাসাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবিধান ও প্রচলিত আইন মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। হাটহাজারীতে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের দাখিল করা প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা শেষে গতকাল রোববার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরুউদ্দীনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। ওই নির্যাতনের ঘটনায় গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, স্থানীয় পুলিশ সুপার,ওসি ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আদালতে এসব প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের পর তার বাবা-মা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হননি। শিশুর বাবা-মা প্রচÐ ধর্মভিরু হওয়ায় তারা তাদের সন্তানের শিক্ষক এবং কোরআনে হাফেজের বিরুদ্ধে মামলা করাটা অশোভনীয় মনে করে মামলা না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপর তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। তাকে মাদ্রাসা থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশুটির গ্রামের বাড়িতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় গৃহীত পদক্ষেপ জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট ডিসি, এসপি ও ওসিকে এ তথ্য জানাতে বলা হয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ঘটনাটি আদালতের নজরে আনলে এসব আদেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্ট তার আদেশে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, গ্রেফতার ও মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিনা এবং ফৌজদারি আইনে মামলা করা হয়েছে কিনা, এসব জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার শিশুকে চিকিৎসা ও নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে কিনা তাও জানাতে বলেছিলেন আদালত। ওই নির্দেশনা অনুসারে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেন সংশ্লিষ্টরা। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার ওই মাদ্রাসায় শিশু ছাত্রকে বেত্রাঘাত করেন শিক্ষক ইয়াহিয়া ইসলাম। পরে ওই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।