ভেস্তে গেলো অজয় সরকারের অর্ধ কোটি টাকার মিশন!

0
1018

এম জে ফরাজী : অবশেষে আগামী ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খুলনা জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সোমবার বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্মেলনের জন্য ২৭ অক্টোবরকে বেছে নেওয়া হয়। খুলনা জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে সম্মেলন ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনের যে চেষ্টা করেছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক অজয় সরকার; তা এক প্রকার ভেস্তে গেলো।
সূত্র জানায়, দীর্ঘ ১৫ বছর পর হতে যাচ্ছে খুলনা জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্প্রতি খুলনায় গুঞ্জন উঠেছিলো সম্মেলন ছাড়াই ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি হতে যাচ্ছেন অজয় সরকার। যাকে নিহত চরমপন্থি মৃনালের সহযোগী হিসেবে বলা হয়ে থাকে। তার প্যানেলে সাবেক একজন ছাত্রনেতাও রয়েছেন; যাকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক করে নাম প্রস্তাব করা হয় কেন্দ্রে। সভাপতি-সম্পাদক নাম চূড়ান্ত করে অজয় সরকার যে কমিটি গঠনের পায়তারা করছিলেন তার খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসে জেলা যুবলীগ। সম্প্রতি ঢাকায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ড. ওমর ফারুক চৌধুরীর সাথে স্থানীয় নেতারা দেখা করেন। যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিশেষ নির্দেশে জরুরী ভিত্তিতে নির্বাচনের আগেই সম্মেলন আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। তার নির্দেশ মোতাবেক গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২৯৬ জনকে কাউন্সিলর করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আর গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় কাউন্সিলরদের অনুমোদন দিয়ে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এতে করে জেলা যুবলীগের সভাপতি হতে অর্ধ কোটি টাকার যে মিশন নিয়ে অজয় সরকার মাঠে নেমেছিলেন তা পুরোপুরি দিবাস্বপ্নই রয়ে গেলো।
এ বিষয়ে আলোচনায় থাকা অজয় সরকার বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সম্মেলন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সম্মেলন হলে আমি প্রার্থী হবো কিনা জানাবো।’
অর্ধ কোটি টাকার মিশনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় সংগঠন। এ সংগঠন বা এর অঙ্গ সংগঠনে অর্থের বিনিময়ে পদে আসা যায় কিনা তা আমারা জানা নেই। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে; যাতে আমি যুবলীগের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে না আসতে পারি।’
চরমপন্থি কানেকশনের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি জোট সরকারের আমলে একাধিক মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামী হয়েছি। যার কেস পার্টনার অনেক আওয়ামী লীগ নেতা; তাহলে তারা কি চরমপন্থি প্রশ্ন রাখেন তিনি। তিনি জানান, ‘যখনই আমি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে চাই, তখনই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়।’
সম্মেলনের বিষয়ে জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ বলেন, ‘যুবলীগ চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ৯ উপজেলা থেকে ২৫ জন করে এবং জেলা থেকে ৭১ জনের নাম কাউন্সিলর তালিকা প্রস্তুত করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সোমবারের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ২৭ অক্টোবর জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে মোঃ কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। এই দু’জন নেতা ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর মূল দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় নেতৃত্ব শূন্যতায় পড়ে জেলা যুবলীগ। আর দীর্ঘ ১৫ বছর সম্মেলন না হওয়ায় সংগঠনের এক-তৃতীয়াংশ নেতা আজ নিষ্ক্রিয়। ফলে সভাপতি-সম্পাদক না থাকায় প্রায় তিন বছর ধরে অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে জেলা যুবলীগের কার্যক্রম।