বিশ^ নবী (সঃ) এঁর চরিত্র মাধুর্য্যরে ভূয়সী প্রশংসা নোবেল বিজয়ীদের

0
208

স. ম. গোলাম মোস্তফা:
হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তিনি ছিলেন মানবতার মুক্তির দুত। তিনি ছিলেন শেষ নবী ও বিশ^ নবী। সকল মহাপুরুষের সকল মহৎ গুনাবলী তাঁর চরিত্রে এককভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। তাই তিনি বিশ^ ইতিহাসে ও বিশ^ সাহিত্যের ইতিহাসে একটি আলোকিত নাম। শুধু তাঁর কোটি কোটি উম্মতগণ নয়। বলা যায় সমগ্র বিশ^বাসী মহানবীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এর মধ্যে নোবেল বিজয়ী মনীষীগণও রয়েছেন। নোবেল বিজয়ী জজ বার্নার্ডশ একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একজন খ্যাতিমান নাট্যকার ছিলেন। ১৯২৫ সালে সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই নোবেল বিজয়ী বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এঁর ধর্মে প্রতি আমি সব সময় সুউচ্চ ধারনা পোষন করি। কারণ এ ধর্ম চমৎকার প্রাণবন্ত। আমার কাছে মনে হয় এটাই একমাত্র ধর্ম যেটা সদ্য পরিবর্তনশীল জীবন যাত্রার সঙ্গে অঙ্গীভূত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। যা প্রত্যেকই যুগেই মানুষের হৃদয়ে আবেদন রাখতে সক্ষম। তিনি চমৎকার একজন মানুষ ছিলেন এবং আমার মৃত খ্রীষ্ট বিরোধ হওয়া সত্বেও তাঁকে অবশ্যই মানবতার ত্রাণ কর্তা বলতে হবে।
জর্জ বার্নাডশ মহানবী (সঃ) সম্পর্কে আরো বলেন, ‘হে বিশ^বাসী যদি তোমরা নিজেদের সমস্যার সমাধান করতে চাও এবং সর্বাঙ্গীন সুন্দর জীবন ব্যবস্থা কামনা কর, তবে বিশ^ সংসারের নিয়ন্ত্রণভার মুহাম্মদ (সঃ) এঁর হাতে ছেড়ে দাও।’
নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী স্যার সি ভি রমন ১৯৩০ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বিশ^ নবী মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে তিনি বলেছেন মুহাম্মদ (সঃ) নিজেকে ভগবানের সমান মনে করেন নি। তাঁর অনুসারীরা কখনো একবারের জন্যও বলেনা যে, তিনি একজন মানুষের চেয়ে বেশী অন্য কিছু ছিলেন। তারা কখনো তাঁর উপর ঐশি সম্মান আরোপ করেন না। নিঃসন্দেহে আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (সঃ) অন্য যে কোন ব্যক্তির চেয়ে দুনিয়ার অধিকতর কল্যাণ সাধন করে গেছেন।
বিশ^ সাহিত্য নোবেল বিজয়ী রুশ ঔপান্যাসিক লিও টলষ্টয় ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। মহান ইসলাম ধর্মের ওপর পড়াশুনা করে তিনি আলোকিত হয়ে ছিলেন। ইসলামী জীবন পদ্ধতি ও দর্শন তাঁকে বিপুল ভাবে প্রভাবিত করেছিল। তিনি বলতেন, আমি সেই ধর্মে বিশ^াসকরি যে ধর্মে ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্য ও সত্যের সন্ধান মিলে এমন মানুষকে মানবকল্যাণে উদ্বুদ্ধ করে। ১৯১৩ সালের ৭ নভেম্বর টলষ্টয় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর যখন তা ওভারকোট খুলে ফেলা হয় সেই ওভারকোটের পকেটে পাওয়া যায় ইংরেজীতে লেখা একটি বই। বইটির নাম ছিল “দি সেইং অব মুহাম্মদ”। বইটিতে তিনি মুহাম্মদ (সঃ) এঁর বানী সংকলন করেন। ভারতীয় মুনীষী ড. সোহরাওয়ার্দ্দী ঐ বইটি অনুবাদ করেছেন। যাতে লেখা আছে “আমি মুহম্মদ (সঃ) এঁর কাছে অনেক কিছুই শিখেছি। তাঁর আর্বিভাবের আগে পৃথিবী ছিল ভ্রান্তির অন্ধাকারে আচ্ছাদিত। তিনি সেই আঁধারে উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা রূপে জ¦লে উঠলেন। আমার নিশ্চিত বিশ^াস হয়েছে যে, মুহাম্মদ (সঃ) এঁর ধর্ম প্রচার ও জীবন দর্শন ছিল যথার্থ”।
রুশ ভাষার লেখক আলেকজান্ডার সোলঝেনিৎসিন ও নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি এই মর্মে প্রচার করেন যে, “রাসুল (সঃ) কর্তৃক প্রচারিত ইসলাম আগামী দিনে একটি বৃহৎ শক্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছে”।
১৯৪৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন বিশ^ জুড়ে তুমুল আলোচিত কবি টি. এস. এলিয়ট। প্রখ্যাত এই ইংরেজ কবি তার কবিতায় মহানবী (সঃ) সম্পর্কে লিখেছেন “মুহাম্মদ (সঃ) আজীবন অকাতরে কেবল দানই করেছেন। কারও দান তিনি গ্রহণ করেন নি”।
এমন অনেক নোবেল বিজয়ী, খ্যাতিমান মুনীষী রয়েছেন মহানবী (সঃ) সম্পর্কে যাদের মন্তব্য গুরুত্ব বহন করে। পৃথিবীতে তিনি একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক লেখক, কবি-সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ ও চিন্তাবিদদের কাছে সমাদৃত হয়েছেন। অথচ এই মহামানবকে নিয়ে ফরাসি পত্রিকা “শার্লি এবদো” ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেছে। যা জঘন্য ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছু নয়। এ ঘটনায় বিশে^র কোটি কোটি মুসলমান আজ ব্যথিত।