বাড়ছে রাজনৈতিক হত্যাকাÐ দ্রæত বিচার নিশ্চিত করতে হবে

0
199
গণপরিবহনে নারী হয়রানি অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না কেন?

টাইমস সম্পাদকীয় : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক নেতাকর্মী খুনের ঘটনা বাড়ছে। এতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করছে প্রতিপক্ষ। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চÑএই তিন মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থক ছিলেন। ৩০ জনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। এই প্রতিষ্ঠানের ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২১’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে নির্বাচনসহ রাজনৈতিক বিরোধে ১১৩ জন নিহত হয়েছে। তাদের বেশির ভাগ গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যায়। তাদের হিসাবে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৩টিতেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে, ২০২০ সালে রাজনৈতিক হত্যাকাÐ ঘটেছিল ৩১টি, ২০১৯ সালে ৩৯টি। ২০১৮ সাল ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। ওই বছর রাজনৈতিক হত্যাকাÐ ঘটেছে ৬৯টি। ২০১৭ সালে রাজনৈতিক হত্যাকাÐ ঘটেছে ৫২টি। এ দেশের মানুষ সব সময় একটি সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজ চেয়েছে। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হামলা বন্ধ হয়নি। রাজনৈতিক বৈরিতা যদি চরম অস্তিত্ববিনাশী রূপ ধারণ করতে থাকে, তাহলে তো আমরা কিছুতেই আর গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার পথে এগোতে পারব না। পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র মনে করছে, গত বছর রাজনৈতিক হত্যাকাÐের বেশির ভাগ ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দলে। রাজনৈতিক হত্যাকাÐের বেশির ভাগ ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটেছে বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। পুলিশ মনে করছে, বেশির ভাগ রাজনৈতিক হত্যাকাÐ ঘটেছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের রেষারেষির কারণে। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে ভাড়াটে খুনিদের ব্যবহার করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্থ রাজনীতির চর্চা নেই বলেই হানাহানির ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে অনাকাক্সিক্ষত। আমরা রাজনৈতিক হত্যাকাÐের এসব ঘটনায় সত্যিকার অর্থেই শঙ্কিত বোধ করছি। রাজনৈতিক খুন আর গণতন্ত্র সমানভাবে চলতে পারে না। একটি অন্যটির বিরোধী। এ জাতীয় রাজনৈতিক খুনের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সবাইকে সংযত ও সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া দেখা যায় রাজনৈতিক হত্যাকাÐগুলোর বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা। দ্রæত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারণে এই ধরনের অপরাধের প্রবণতাও বাড়ছে। সেজন্য সামাজিক সহিষ্ণুতার চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজনৈতিক হত্যাকাÐের দ্রæত বিচার নিশ্চিত করাও প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।