বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের হুঁশিয়ারি

0
262

খুলনাটাইমস বিদেশ : উইঘুর ও অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক মুসলমানদের আটক বন্ধ করতে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে জাতিসংঘে ২২টি দেশের উদ্যোগে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনার সহায়ক হবে না।চীনে প্রায় দেড় কোটি উইঘুর মুসলমানের বাস। জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ উইঘুর মুসলিম। এই প্রদেশটি তিব্বতের মতো স্বশাসিত একটি অঞ্চল। বিদেশি মিডিয়ার সেখানে প্রবেশের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে, সেখানে বসবাসরত উইঘুরসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ব্যাপক হারে আটকের শিকার হচ্ছে। চীনে হান চাইনিজরা সংখ্যাগুরু। তাদের তুলনায় মুসলিম উইঘুরদের সংখ্যা নগন্য। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোও জাতিসংঘের কাছে এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের গণহারে আটকের অভিযোগ এনেছে তারা। তবে চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার কমিটির কাছে ২৩টি দেশের যৌথ বিবৃতি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা চীন সরকারকে তাদের অভ্যন্তরীন আইন ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানাই এবং জিনজিয়াংসহ পুরো চীনে ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৩টি দেশের এই বিবৃতির কড়া সমালোচনা করেছে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা দূত যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে সাংবাদিকদের বলেন, কল্পনা করা কঠিন যে এক হাতে আপনারা বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা করবেন আর অপর হাত দিয়ে অন্য ইস্যু, বিশেষ করে মানবাধিকার ইস্যুতে অন্যকে দোষারোপ করবেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি না এটা বাণিজ্য আলোচনার ভালো সমাধানের জন্য সহায়ক হবে। প্রসঙ্গত, চীনের সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে গত বছর থেকে বেইজিংয়ের রফতানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ শুরু করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বেইজিংও মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ শুরু করে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে চলতি বছরের মে মাসে ওয়াশিংটন-বেইজিং আলোচনায় বসলেও কোনও চুক্তি ছাড়াই তা শেষ হয়। পরে চলতি মাসের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্বমন্ত্রী স্টিভেন ম্নুচিন বলেন, আগামি মাসে (নভেম্বর) দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রথম ধাপের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য খসড়া চূড়ান্ত করতে দুই দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। গত ১১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেন, অচিরেই দুই দেশের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।