বাংলাদেশ সরকারের ত্রিশাল, ময়মনসিংহ এলাকার সাবেক এমপি রেজা আলী আর নেই

0
144

ঢাকা অফিসঃ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩: শোকস্তব্ধ হৃদয়ে আমরা জানাচ্ছি যে, রেজা আলী, বাংলাদেশ সরকারের ত্রিশাল, ময়মনসিংহ এলাকার সাবেক এমপ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।

ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

১৯৪০ সালের ১০ এপ্রিল জন্ম নেওয়া রেজা আলী, প্রয়াত টি. আলী (কসবা) এবং প্রয়াত সারাহ আলীর (সিলেট) বড় সন্তান। তাঁর পিতা জনাব টি. আলী কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী, মিশরে নিযুক্ত অ্যাম্বাসেডর, ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

রেজা আলী সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল, ঢাকা; আইচিসন কলেজ, লাহোর; এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি একজন অ্যাডভোকেট হিসাবে উত্তীর্ণ হন এবং সুপ্রিম কোর্ট বারের সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৬০ সালে স্বৈরাচারি শাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করার কারণে তাঁকে কারাবন্দী করা হয়।

১৯৬৮ সালে বিটপী অ্যাডভার্টাইজিং লিমিটেড-এর সূচনা করেন বাংলাদেশের অ্যাডভার্টাইজিং ইন্ডাস্ট্রির পথপ্রদর্শক রেজা আলী। তাঁর মায়া বড়ি, রাজা, এবং ওরস্যালাইন-এর ক্যাম্পেইন সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্য খাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখেছে। তাঁর অন্যান্য ক্যাম্পেইন যেমন বাটা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, কোকাকোলা, রেকিট বেনকিজার, গ্রামীণফোন, এবং অগুনতি ব্র্যান্ডের কাজ সাংস্কৃতিক লোকগাথার সাথে গভীরভাবে জড়িত।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নিজের জীবন ঝুঁকিতে রেখে তিনি বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, এবং তাঁদের পরিবারকে পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্য ও রাজাকারদের হাত থেকে বাঁচাতে বর্ডার পার করিয়ে দিতেন।

পরবর্তীতে, ১৯৮৪ সালে তিনি মিসামি গার্মেন্টস শুরু করেন যা সময়ের সাথে বিশ্বমানের ফ্যাক্টরিতে পরিণত হয়। পৃথিবীর ২ টি সর্বোচ্চ LEED সার্টিফাইড ফ্যাক্টরিও তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন।

বাংলাদেশের শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রির শুরুর লগ্নে তাঁর অবদান অসামান্য। পাশাপাশি বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট তিনি।

রেজা আলী নিজের নির্বাচনী এলাকা ত্রিশাল, ময়মনসিংহে রেমি ফার্মস প্রতিষ্ঠা করেন এবং তুমুল জনসমর্থন নিয়ে সেখান থেকে জাতীয় সংসদের একজন সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে আফ্রিকা কিংবা হিমালয়ের পাহাড়চূড়া আরোহণ; জীবনের প্রতি সংরাগ ও উৎসাহ কখনো হারাননি তিনি।

মৃত্যুকালে তিনি তাঁর স্ত্রী প্রফেসর (অবসরপ্রাপ্ত) নাইমা আলী; ভাই মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সাদেক আলী, সাবেক অ্যাম্বাসেডর ড: তৌফিক আলী,  পাশা আলী; সন্তান মিরান, সারাহ, এবং মিশাল; ও তাঁর নাতি-নাতনি তারেশ, রিশান, ইরাজ, আলেহান্দ্রো, আমারা এবং তাঁর বাবা অরূপের গুণগ্রাহী ছিলেন।

মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, বাদ জোহর, মসজিদ আল-ফালাহ, ২২ বিডেফোর্ড রোড, সিঙ্গাপুর, ২২৯৯২৩-এ তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, বাদ জোহর, গুলশান আজাদ মসজিদে।  তাঁর তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বাদ আসর, বুধবার ১৫ ফেব্রুয়ারি, বসুন্ধরা আ/এ কেন্দ্রীয় মসজিদ, ব্লক-ডি, রোড-৪ (মুফতি আবদুর রহমান রোড)-এ। বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ত্রিশালের নজরুল একাডেমিতে বাদ জোহর, তাঁর চতুর্থ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে বাদ আসর, ত্রিশালে পঞ্চম নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থান রেমি ফার্মস, ধনিখোলা, ত্রিশালে তাঁকে দাফন করা হবে।

পরিবারের পক্ষ থেকে সকলকে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।