বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্পের জন্য স্থানীয় এনজিও থেকে এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান ব্র্যাকের

0
27

ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্পের প্রথম বছরের (২০২৪ অর্থবছর) অনুদান কর্মসূচির জন্য আঞ্চলিক/স্থানীয় এনজিওদের কাছ থেকে এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করা যাচ্ছে। ইওআই প্রাপ্তির পর মৈত্রী কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইওআই মূল্যায়ন এবং যোগ্য প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করবে, যাদের পরবর্তীতে প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। আরো বিস্তারিত তথ্যের জন্য ইওআই দেখুন। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ২৯ জুন ২০২৪ তারিখ বিকাল ৫.০০টার (বাংলাদেশ সময়) মধ্যে প্রাক-যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণপূর্বক -এর মাধ্যমে জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। সকল আগ্রহীদের প্রস্তাবপত্র উন্নয়নে মৈত্রী কর্তৃপক্ষ ১১ জুন এবং ২৪ জুন অনলাইন কর্মশালার আয়োজন করবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য ৯ জুন ২০২৪ তারিখ বিকাল ৫.০০টার (বাংলাদেশ সময়) মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য সকল সংস্থাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। ইওআই ডকুমেন্ট এর লিঙ্ক: https://brac.net/maitree-project
মৈত্রী প্রকল্প কী?
বাংলাদেশ-আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্পটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত একটি পাঁচ বছর মেয়াদি উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের অংশীদারদের ক্ষমতায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্যাপক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিকভাবে প্রাপ্ত কৌশলগুলোর উপর ভিত্তি করে প্রকল্পটি দেশের সকল নাগরিকের জন্য উন্নত জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করবে। এফএইচআই৩৬০ এবং ব্র্যাক ইউএসএ-এর সহযোগিতায় মৈত্রী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাক। দুটি সংস্থাই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে এবং দেশের নাগরিক সমাজের সাথে তাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। নাগরিক সমাজ, উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে মৈত্রী প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এই অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করবে যে প্রকল্পটি সকলের চাহিদা পূরণ এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।
মৈত্রী প্রকল্প শক্তিশালী স্থানীয় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ব্যাপকভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং আরও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী, যা ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশল এবং উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে।
মৈত্রী প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় অংশীদারদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, প্রকল্পটি একটি নমনীয় তহবিল প্রদানের কাঠামো তৈরি করেছে যা প্রতিটি অংশীদারের প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের কারিগরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। প্রকল্পটি একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সক্ষম এবং যোগ্য আঞ্চলিক অংশীদারদের নির্বাচন করা হবে। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করবে যে, যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এবং যারা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে তাদের কাছে প্রকল্পের তহবিল পৌঁছায়। প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে অনুদান, প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ। এটি নিশ্চিত করবে যে প্রতিটি অংশীদার তাদের নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী তহবিল ব্যবহার করতে পারে। তহবিল প্রদানের পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক সরঞ্জাম সরবরাহ, যথাযথ কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নে মৈত্রী প্রকল্প সহায়তা করবে। এর ফলে আঞ্চলিক সংস্থাগলো তাদের সাংগঠনিক উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।
মৈত্রী প্রকল্প একটি মানবিক উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির জরুরি-গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ, দূর্যোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা বৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ তৈরির দিকে মনোযোগ দেয়া হবে। বাংলাদেশের হাওর, উপকূলীয় এলাকা, বরেন্দ্র অঞ্চল, চর, এবং পাহাড়ি এলাকাসহ জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোকে মৈত্রী প্রকল্পে প্রাধান্য দেয়া হবে।
বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিবেশ বিবেচনা করে মৈত্রী প্রকল্প ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়ন কৌশল গ্রহণ করেছে। ২০২৪ সালে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে বরেন্দ্র, হাওর এবং উপকূলীয় অঞ্চলের নির্বাচিত জেলাগুলোতে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিল প্রদান করবে। কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তা, শিশু অধিকার এবং সুরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্রস-কাটিং ইস্যু হিসাবে মানবিক সহায়তামূলক কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। প্রকল্পের পাঁচ বছরের সময়কালে মৈত্রী প্রকল্প আরও ব্যাপকভাবে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তার কার্যক্রমের প্রসার ঘটাবে, যার মধ্যে রয়েছে বরিশাল, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলা।
মৈত্রী প্রকল্পের পটভূমি
গত কয়েক দশকে আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে আঞ্চলিক এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। আঞ্চলিক এনজিওগুলোও নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করছে। মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা কাঠামো অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে। মৈত্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বাছাইকৃত আঞ্চলিক সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
মৈত্রী প্রকল্পের লক্ষ্য
দেশীয় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বৃহত্তর, অন্তর্ভুক্তিমুলক এবং আরও টেকসই উন্নয়নে কাজ করা যা ইউএসএআইডি/বাংলাদেশের সিডিসিএস এর লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
মৈত্রী প্রকল্পের উদ্দেশ্য
প্রতিযোগীতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর জন্য একটি কার্যকর অনুদান কাঠামো তৈরি করা।
আঞ্চলিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে টেকসই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here