“বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কুয়েট অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে”

0
403

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) প্রতিনিধিঃ বর্ণাঢ্য আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শনিবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ১৫তম বর্ষপূর্তি, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. এম. শাহ্্ নওয়াজ আলি এবং সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন। দিনটিকে স্মরণীয় করতে সেজেছিল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই ছিল সাজ-সাজ রব। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি সমাবেশ। এরপর পৌনে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা। পতাকা উত্তোলন শেষে প্রধান অতিথি বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. এম. শাহ্্ নওয়াজ আলি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কাজী হামিদুল বারী বক্তৃতা করেন।
এরপর সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংবাদিক, আমন্ত্রিত অতিথিসহ বাহারী সাজে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ফুলবাড়ীগেট এলাকা প্রদক্ষীণ শেষে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনী, টেকনিক্যাল পেপার প্রেজেন্টেশন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. এম. শাহ্্ নওয়াজ আলি।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কুয়েট অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। কুয়েটকে স্ব-মহিমায় উন্নীত করার জন্য বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে”। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান স্মরণ করে প্রধান অতিথি আরো বলেন, “বাংলাদেশ বিশে^র কাছে এখন এক অনন্য মডেল, আর এ বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এদেশের অগ্রযাত্রার সৈনিক”। সভাপতি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “কুয়েট আজ দেশের অন্যতম সেরা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের গ্রাজুয়েটরা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনামের সাথে কাজ করছে। আমি বিশ^াস করি সেদিন দুরে নয় যখন বিশে^র সনামধন্য বিশ^বিদ্যালয়ের তালিকায় কুয়েট স্থান করে নেবে। এজন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে আরো বেশী করে গবেষনায় মনোনিবেশ করতে হবে”।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কাজী হামিদুল বারী, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার এবং স্বাগত বক্তৃতা করেন পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন যথাক্রমে পাবলিক রিলেশনস অফিসার মনোজ কুমার মজুমদার এবং ইউআরপি বিভাগের প্রভাষক খন্দকার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ইকরাম।
দুপুর পৌনে ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’ চত্বরে প্রধান অতিথি গাছের চারা রোপন করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উম্মুক্তকরণ, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ০১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। এবছর ১৬তম বর্ষে পদার্পন করছে নবীন এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিবছর ০১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হলেও পবিত্র ঈদের ছুটির পরপরই দিবসটি থাকায় এবছর দিবসটি পালনের কর্মসূচি পালিত হয় ২২ সেপ্টেম্বর শনিবার।