বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি পরলোকে, খুবি উপাচার্যের শোক

0
272

খবর বিজ্ঞপ্তি:
চলে গেলেন ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। করোনাসহ শারীরিক নানাজটিলতা নিয়ে দিল্লীর সেনা হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ দিল্লীর স্থানীয় সময় বিকেল পৌণে ছ’টায় তিনি পরলোক গমন করেন। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো প্রায় ৮৫ বছর। ১৯৩৫ সালের ১১ডিসেম্বর তিনি ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার কীর্ণাহার শহরের নিকটস্থ মিরাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ়্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী প্রণব মুখোপধ্যায় ছিলেন বাংলাদেশের জামাই। যশোরের নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে তাঁর শ্বশুর বাড়ি। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিলো শুভ্রা মুখার্জি। তিনি ২০১৫ সালে পরলোক গমন করেন। প্রণব মুখার্জির রাজনৈতিক কর্মজীবন ছয় দশকব্যাপী। তিনি ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা। বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন। ২০১২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় সমস্যা-সমাধানকারী নেতা।
প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বিবৃতিতে তিনি বলেন ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপধ্যায় ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু,সুহৃদ। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্ব, দূরদর্শীতা, প্রজ্ঞা ও ব্যক্তিত্বের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। তিনি সবসময় চেয়েছেন বাংলাদেশের উন্নতি ও ভারতের সাথে সুসম্পর্ক। উপাচার্য স্মরণ করেন ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়, তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছিলেন। তবে সমাবর্তনের আগে শীতে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা কিছুটা বাড়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসার কর্মসূচির কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেষপর্যন্ত তিনে যোগ দিতে পারেননি। তবে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন। উপাচার্য তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
প্রণব মুখোপাধ্যায় একাধিক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে ইউরোমানি পত্রিকার সমীক্ষায় তাকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী বলা হয়েছিল। ২০১০ সালে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের দৈনিক সংবাদপত্র এমার্জিং মার্কেটস তাকে ‘”ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়ার ফর এশিয়া” পুরস্কার দিয়েছিল। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে, দ্য ব্যাঙ্কার পত্রিকা তাকে “ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়াস” সম্মান দিয়েছিল। ভারত সরকার ২০০৮ সালে তাকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মবিভূষণ প্রদান করেছিল। ২০১১ সালে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডক্টর অফ লেটারস ডিগ্রি দেয়। ২০১২ সালের মার্চ মাসে অসম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বেশ্বরায়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডি. লিট ডিগ্রি দেয়। ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডক্টরেট অফ ল ডিগ্রি দেয়। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার “বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা” পান। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ মরিশাস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টর অফ ল সম্মান দেয়। তিনি ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ভারতরতœ পুরস্কারে সম্মানিত হন। তাঁর রচিত গন্থাবলির মধ্যে রয়েছে মিডটার্ম পোল’ বিয়ন্ড সারভাইভ্যাল
এমার্জিং ডাইমেনশনস অফ ইন্ডিয়ান ইকোনমি অফ দ্য ট্র্যাক, সাগা অফ স্ট্রাগল অ্যান্ড স্যাক্রিফাইস চ্যালেঞ্জ বিফোর নেশন]