বর্ষবরণের প্রস্তুতিতে কর্মমুখর জাবি

0
610

খুলনা টাইমস ডেস্ক
‘পয়লা বৈশাখ’ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে বরণ করে নিতে সাজসাজ্জার কাজে উৎসবমুখর কর্মব্যস্ততায় ব্যাস্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত এ সবুজ ক্যাম্পাস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনের জায়গাটিতে চারুশিল্পীদের মধ্যে কেউ গভীর মনোযোগে দিয়ে জলরঙের ছবি আঁকছেন, কেউ নকশা করছেন মাটির সরায়। অনেকে মিলে কাগজের ম- দিয়ে তৈরি করছেন রাজা-রানির বড় বড় মুখোশ। এছাড়া কাগজ কেটে ফুল, প্যাঁচা, পাখপাখালি তৈরি করছেন। সুন্দর করে এসব সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভাগটির সামনে। আর দূরদূরান্ত থেকে লোকজন কিনতে আসছে এসব নান্দনিক জিনিসপত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘পয়লা বৈশাখে’র দিনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে।


এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সভাপতি এম এম ময়েজ উদ্দীন বলেন, ‘শোভাযাত্রার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। এবারের শোভাযাত্রায় আমরা মোরগটাকে রেখেছি বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে। কারন গ্রামে মোরগের ডাক শুনে ঘুম ভাঙ্গে। বর্তমান দেশের এ পরিস্থিতিতে ঘুম থেকে জেগে উঠা তথা একটা জাগরণ দরকার। সময়সাময়ীক যেসব দ্বন্দ্ব সংঘাত, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ এসব মোকাবেলায় সরকার যেমন চেষ্টা করছে সে তুলনায় সাধারন মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়াটা কম। তাই আমরা সচেতনতা তৈরি এবং অন্তরের ঘুম ভাঙ্গার জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় মোরগটা রেখেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মূলত আমারা এ মঙ্গলশোভা যাত্রাটা বের করি সমাজ এবং দেশের মঙ্গলের জন্য। তাই এবার আমারা সকল দন্দ্ব সংঘাত মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কামনা করেই এ মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করবো।’
এছাড়াও তিনি জানান, ‘এবারের বৈশাখে বিশেষ আয়োজন হিসেবে থাকছে ‘ব্যাঙের বিয়ে’। পুরান কলা থেকে বর পক্ষকে আমরা নিয়ে যাব, আর নতুন কলায় থাকবে মেয়ে পক্ষ। সেখানে গিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিয়ে হবে। তারপর সে ব্যাঙগুলোকে আমরা পুকুরে ভাসাবো। তখন ফানুস উড়বে, আর পুকুরে প্রদীপ জালানো হবে।’


এদিকে এ দিনটিকে উৎযাপন করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপী ‘বৈশাখি মেলার’ আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার চত্বরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলার উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। মেলার পাশাপাশি এ আয়োজনে থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কলা ও মানবিকী অনুষদ’ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। পয়েলা বৈশাখের সূর্যোদয়ে থাকছে ‘সম্মিলিত আগমনী সংগীত’, তারপর মুড়কি বিতরণ, লৌকিক খেলাধূলা, পুতুল নাচ ও সংগীত অনুষ্ঠান। সবগুলো অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও বিভাগুলো নিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন। প্রতিটি বিভাগে আলপনা, রং ইত্যাদি দিয়ে মনমাতানো রূপে সাজানো হচ্ছে। থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।