বনানীতে চীনা নাগরিক হত্যায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা

0
384

খুলনাটাইমস: ঢাকার বনানীতে এক চীনা নাগরিককে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। নিহত চীনা ব্যবসায়ী গাউজিয়ান হুইর বন্ধু জাঙ শান-হং গত বুধবার রাতে বনানী থানায় এসে ওই মামলা দায়ের করেন বলে বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া জানান। জাঙ শান-হং নিজেও একজন চীনা নাগরিক। তিনি ঢাকার উত্তরায় থাকেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি জানিয়ে ওসি নূরে আজম বলেন, গাউজিয়ান হুইর বাড়ি থেকে আটক তার গাড়ি চালকসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও আলোচিত এ হত্যার ঘটনার তদন্ত করছে। গত বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাসার পাশ থেকে ৪৭ বছর বয়সী ওই চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তার গাড়িচালক সুলতানসহ তিনজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ জন্য থানায় নিয়ে যায়। দশ তলা ওই ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন গাউজিয়ান। ঢাকায় তিনি পাথরের ব্যবসা করতেন এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজেও পাথর সরবরাহ করতেন বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে। পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুল আহাদ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাউজিয়ানকে দেখেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তার কর্মচারীরা। সন্ধ্যার পরে কোনো একসময় তাকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। গত বুধবার সকালে বাসার কাজের লোকজন ভবনের পাশের খোলা জায়গায় কাজ করার সময় মাটি থেকে শরীরের অংশ বেরিয়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তারা পায়ের গোড়ালি আর মাথার চুল মাটির উপরে বেরিয়ে থাকতে দেখেন। তখন সিআইডি ও চীনা দূতাবাসে খবর দেওয়া হয়। তাদের উপস্থিতিতে গাউজিয়ানের লাশ তোলা হয়। সে সময় গাউজিয়ানের নাকে রক্ত এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। ষষ্ঠ তলার যে ফ্ল্যাটে গাউজিয়ান থাকতেন, তার সামনের অংশে ছিল তার অফিস। সেখানে একটি স্যান্ডেলে কয়েক ফোটা রক্ত এবং দরজায় ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন উপকমিশনার সুদীপ। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে মনে হয়েছে। ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো ছিল বন্ধ। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিল। গত ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে বসবাস শুরু করার পর থেকে ১৭-১৮ বার চীনে যাতায়াত করেছেন গাউজিয়ান হুই। ঘটনার সময় তার পরিবারের সদস্যরা কেউ ঢাকায় ছিলেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। চীনা এই নাগরিকের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে।