বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে : তথ্যমন্ত্রী

0
238

খুলনাটাইমস ডেস্ক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন ‘বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করতে যারা ব্যর্থ হয়েছে, তারা ধীরে ধীরে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। দেশের সংকটময় সময়ে বিএনপি জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিষোদগার করছে অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন,‘আমরা চাইব এমন সময় বিষোদগারের রাজনীতি না করে দেশও জনগণের স্বার্থে সম্মিলিতভাবে বিএনপি কাজ করবে।’ তথ্যমন্ত্রী বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। ড. হাছান বলেন, ‘মঙ্গলবার মুজিববর্ষ শুরু হয়েছে। দেশ যখন উৎসবে মুখর তখন এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে শুরু করে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানগণ বঙ্গবন্ধুর ওপর বক্তব্য রেখেছেন। বিশেষকরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছে একটি প্রেরণার উৎস, বঙ্গবন্ধু এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছেন। অথচ আমাদের দেশে বিএনপি-জামায়াত এই কথাটি স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছে। যারা এই কথাটি স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা ধীরে ধীরে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।’ ‘করোনাভাইরাসের যে আতঙ্ক বিশ্বব্যাপী সেটির মধ্যেও মুজিববর্ষ নিয়ে মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনার কোনো কমতি ছিল না’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতি বিনম্র চিত্তে, শ্রদ্ধাভরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছে এবং পুরো বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠানামালা পালন করবে। কিন্তু একটি পক্ষ যারা বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তারা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিল এই বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি তারাই কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষের দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচেছ।’ ড.হাছান বলেন, ‘মুজিববর্ষের শেষান্তে বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিদের ক্ষয়িত শক্তির আরো শক্তির বিনাশ ঘটবে এবং ধীরে ধীরে তারাই দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই।’ ‘বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীদের মুখে মুজিববর্ষ নিয়ে কোনো কথা নেই, জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির প্রশংসায় যখন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বুধবারকে পঞ্চমুখ, সেটি নিয়ে কথা নেই’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘তিনি (রিজভী) কালকে বলেছেন, বুধবারকে সকালেও বলেছেন যে, করোনা ভাইরাস নিয়ে নাকি সরকার লোকোচুরি করছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিদিন প্রেস ব্রিফিং করে কি করা হচ্ছে এবং কতজন সংক্রমিত হয়েছে সেটি জানানো হচ্ছে, এবং কি করণীয় সেটিও বলা হচ্ছে। এটির প্রশংসা না করে এবং জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে, লোক দেখানো কয়েকটা লিফলেট বিলি করে বরং তারা শুধুমাত্র বিষোদগার করছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) তাদের এই বিষোদগারের রাজনীতি, নেতিবাচক রাজনীতি, সবকিছুতে না বলার রাজনীতি, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এবং হত্যাকান্ডের মাধ্যমে তাদের যে রাজনীতির উন্মেষ, সেটি থেকে তারা বেরিয়ে আসবে। মুজিববর্ষে সেটিই প্রত্যাশা করবো।’ এ সময় নারীর বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর পার্লামেন্টে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই করেছেন। সমাজে ও রাষ্ট্রে বিভিন্ন স্তরে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য তিনি অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। নারীর যে অগ্রগতি জাতির পিতার হাত ধরে শুরু হয়েছিল, সেটিকে বাস্তবে রুপ দিযেছেন বঙ্গবন্ধ ুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আগে কখনো ভাবেনি যে নারী ডিসি হবে, নারী এসপি হবে, নারী পুলিশের এডিশনাল আইজিপি হবে, নারী মেজর জেনারেল হবে, নারী হাইকোর্টের বিচারপতি হবে, সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে বিচারপতি হবে, এটি বাংলাদেশে হয়েছে।’ ড. হাছান আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান ভিত্তিক তথ্য দিয়ে জানান, সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে দ্বিতীয়। তুরস্কের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। আর সমস্ত উন্নয়নশীল বিশ্বে নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে শীর্ষে। নারী সাংবাদিকদের পেশাগত তৎপরতার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘পৃথিবীর সমস্ত কাজের যদি খতিয়ান নেয়া হয় তন্মধ্যে পৃথিবীর সমস্ত কাজের ৭০ ভাগ কাজ করে নারী। একজন নারী যখন কর্মজীবী, তখন তিনি অফিস থেকে গিয়ে আবার সন্তানের দেখাশুনা করেন, রান্নাঘরের দেখাশুনা করেন, টেলিফোনেও কর্মস্থল থেকে খোঁজখবর রাখেন।’ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু’র সভাপতিত্বে সাংবাদিক মিজানুর রহমান মজুমদার, মনিমা সুলতানা, আখতার জাহান মালিক, শাহনাজ সিদ্দীকী সোমা প্রমুখ আলাচনায় অংশ নেন।