ফাইজারের কোভিড টিকা থেকে হৃদযন্ত্রে সমস্যা: ইসরায়েল

0
170

টাইমস বিদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের তৈরি কোভিড টিকা দেওয়ার প্রভাবে কারও কারও মধ্যে হৃদযন্ত্রে প্রদাহ দেখা গেছে বলে দাবি করছে ইসরায়েল। বিশেষত কিছু তরুণের ক্ষেত্রে সমস্যাটি এই টিকা দেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। তবে এই টিকা দেওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ‘মায়োকার্ডাইটিস’ বা ‘হৃদযন্ত্রের পেশীর প্রদাহ’ স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চ হারে দেখা যায়নি বলে ফাইজার নিশ্চিত করেছে। এক সমীক্ষার বরাতে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ৫০ লাখেরও বেশি টিকা পাওয়া মানুষের মধ্যে ২৭৫ জন ‘মায়োকার্ডাইটিসে’ আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের তিনটি দলের সমীক্ষা অনুযায়ী, হৃদযন্ত্রে প্রদাহ নিয়ে কাউকে চার দিনের বেশি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়নি। এ ছাড়া ৯৫ শতাংশকেই ‘মৃদু’ আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “টিকার (ফাইজারের) দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সঙ্গে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মায়োকার্ডাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা আছে।” সমীক্ষা অনুযায়ী, বয়সের অন্যান্য কোঠার চেয়ে ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী তরুণদের মাঝে আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক বেশি পাওয়া গেছে। ওষুধ কোম্পানি ফাইজার বিবৃতিতে বলেছে, ‘মায়োকার্ডাইটিস’ নিয়ে ইসরায়েলের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তারা অবগত আছে। এর সঙ্গে তাদের টিকার কোনো সম্পর্ক এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গুরুতর দাবিটি খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ভ্যাকসিন সেফটি ডিপার্টমেন্টের’ তথ্য পরীক্ষা করে দেখার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ফাইজার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনাটি স্থগিত রেখেছিল ইসরায়েল। সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি কিশোর বয়সীদের টিকা দেওয়ার অনুমোদনও দিয়েছে মন্ত্রণালয়। ‘ঝুঁকির চেয়ে টিকার কার্যকারিতা বেশি’ মন্তব্য করে ইসরায়েলের মহামারী-নিয়ন্ত্রণ সমন্বয়ক নাচম্যান অ্যাশ রেডিও ১০৩ এফএমকে বলেন, “১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের টিকার অনুমোদন দিয়েছে কমিটি এবং আগামী সপ্তাহ থেকে তা শুরু হতে পারে।” গত মাসে ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন- সিডিসির একটি পরামর্শক দল ফাইজার এবং মডার্নার ‘এমআরএনএ’ টিকার সঙ্গে ‘মায়োকার্ডাইটিস’ এর সম্পর্কের বিষয়ে আরও গবেষণার প্রস্তাব দেয়। সিডিসির পর্যবেক্ষণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ সংখ্যা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি না হলেও তারা একটি বিবৃতিতে জানায়, টিকা সরবরাহকারীদের উচিত ‘সম্ভাব্য গুরুতর পরিস্থিতির’ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা দাতাদের সতর্ক করা। গণটিকাদানে বিশ্বে এগিয়ে থাকা দেশ ইসরায়েলে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা হাতে গোনা এবং পুরো দেশে এখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মাত্র ৩৪০ জন। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশই এরইমধ্যে টিকা নিয়েছেন। পর্যটন খাতে বিধিনিষেধ থাকলেও ইসরায়েলে অর্থনৈতিক কর্মকাÐ পুরোদমে চালু হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং কিছু রেস্তোরাঁ ও ভেন্যুতে বিশেষ ‘গ্রিন ভ্যাকসিনেশন পাস’ নিয়ে ঢোকার বাধ্যবাধকতাও মঙ্গলবার উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।