এম জে ফরাজী, খুলনাটাইমস : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে পাঁচ মেয়র এবং ১৮৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী প্রার্থীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীকগুলো তুলে দেন।
প্রথমে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সদর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মো. মাহবুব আলম সোহাগ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ শাহজালাল সুজন প্রমুখ।
পরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান লাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর জাতীয় পার্টির (জাপা) এস এম শফিকুর রহমানকে লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হককে হাত পাখা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি ও বাসদসহ পাঁচ দলের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবুকে কাস্তে প্রতীক দেওয়া হয়েছে। মেয়র প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত প্রতীক দেওয়ার পর সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে তাদের পছন্দের প্রতীক দেওয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী, দেশরতœ, আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক সকালে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসেন। সেখানে তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন। তারপর তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রচারণার কাজ শুরু করেন।
এসময় তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে খুলনায় বড় হয়েছি। খুলনার মাটি মানুষের পাশে থেকে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জনগনের পাশে দাড়িয়েছি। আমি খুলনার মানুষের ভোট ও দোয়া নিয়ে কমিশনার থেকে শুরু করে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমি কখনো খুলনার মানুষের সাথে বেঈমানি করিনি। মেয়র থাকা কালিন আমার সর্বস্ব দিয়ে খুলনার উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। আমাকে মেয়র নির্বাচিত করে খুলনার উন্নয়নসহ সকল ধরনের নাগরিক সেবা করার সুযোগ দিন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল হোসেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কাজী আমিনুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা এ এফ এম মাকসুদুর রহমান, কামরুজ্জামান জামাল, শ্যামল সিংহ রায়, মোঃ মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, এ্যাড. নিমাই চন্দ্র রায়, জোবায়ের আহমেদ খান জবা, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, সুজন আহমেদ, শফিকুর রহমান পলাশ, সুমন আহমেদ খান, দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পি, শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন প্রমুখ। এছাড়া তিনি কেডি ঘোষ রোড, স্যার ইকবার রোড, পিকচার প্যালেস মোড়, যশোর রোডের বিভিন্ন অফিস, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ করেন।
অপরদিকে নির্বাচনী অঙ্গীকার ‘গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি’ বাস্তবায়ন করতে নগরবাসীর দোয়া সমর্থন ও ভোট প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে কেসিসি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সমর্থিত নজরুল ইসলাম মঞ্জু আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে বয়রাস্থ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে প্রতীক বরাদ্দ হয়। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত বলে দাবি করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১০টায় কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে আসেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এখানে আসন্ন নির্বাচনে ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের সহায়তা কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়। দোয়া শেষে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী নিয়ে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে গণসংযোগ করেন তিনি। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে টুটপাড়া কবরস্থানে যান। সেখানে তার পিতা-মাতার কবর জিয়ারত করেন।
এ সব কর্মসূচিতে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাতয়াত হোসেন, সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সাবেক এমপি সৈয়দা নার্গিস আলী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, খেলাফত মজলিসের মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, বিজেপির এ্যাড. লতিফুর রহমান লাবু, জামায়াতের মাওলানা গোলাম রসুল, পিপলস লীগের ডাঃ আফতাব হোসেন, বিএনপি নেতা আমীর এজাজ খান, মোল্লা আবুল কাশেম, জলিল খান কালাম, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু প্রমুখ।