প্রতিক্ষার পর খুলনা নার্সিং কলেজের যাত্রা শুরু

0
857

আছাদ জাহিম সোয়াব:
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর খুলনা নার্সিং কলেজের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ২০১৯-২০২০ শিক্ষা বর্ষে পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং/বিএসসি পাবলিক হেলথ নার্সিং কোর্স এ অন-লাইনে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির আবেদন শুরু করেছেন। গত ৬ মে অন-লাইনের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে।
খুলনা নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ খালেদা বেগম শনিবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, চলতি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির মধ্যে দিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যেই অন-লাইনের মাধ্যমে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন করছেন। অন-লাইনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে ঢাকায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের ফলাফলও অন-লাইনে প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, কলেজের সীমান প্রাচীর নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়ে। প্রশাসনিক ও হোস্টেলের কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এগুলোও যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারেও কথাবার্তা চলছে।
জানা গেছে, দুই বছর মেয়াদী বিএসসি নার্সিং/বিএসসি পাবলিক হেলথ নার্সিং কোর্স ১২৫টি আসন নিয়ে কলেজের যাত্রা শুরু করছেন। এ আসনের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মহিলা প্রার্থীদের জন্য আসন সংখ্যা রয়েছে ১০৮টি ও পুরুষ প্রার্থী সংখ্যা রয়েছে ১২টি। এছাড়া বাকী ৫টি আসন বেসরকারি প্রার্থীদের জন্য। এর মধ্যে মহিলা প্রার্থী সংখ্যা ৪ জন ও পুরুষ একজন আবেদন করতে পারবেন। শুধুমাত্র এপ্রিলিকেশন আইডি প্রাপ্ত প্রার্থীগণ এপ্রিলেকশন আইডি প্রাপ্তীর পর বিকাশের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার ফি বাবদ ৫শ টাকা জমা দিতে পারবেন। গত ৬ মে অন-লাইন আবেদন শুরু হয়। আবেদনের শেষ দিন আগামী ২৫ মে রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে। অন-লাইনে প্রবেশপত্র সংগ্রহ ২৯ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সময় রয়েছে। আগামী ১৪ জুন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
নার্সিং কলেজ অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ১০ একর জমির ওপর ১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায় ২০০৯ সালে। ওই সময় একটি একাডেমিক ভবন, একটি গেস্ট হাউজ, কলেজছাত্রীদের জন্য দুইটি হোস্টেল ও ২য় ও ৩য় শ্রেণি পদে কর্মরতদের তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ কাজের অধিকাংশ সম্পন্ন করা হয়। ২০১১ সালে একাডেমিক ভবন চালুর উদ্যোগ নিয়ে ১৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হলেও বর্তমানে একজন প্রভাষকসহ ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন কাগজে-কলমে। তারা সবাই এখনো ডেপুটেশনে রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন প্রভাষক রেবা মন্ডল, ডিমোনেস্ট্রেটর আছেন শরিফুল ইসলাম, আসমাতুল নেছা, আলেয়া বেগম ও জুথিকা রানী মুখার্জী। এদের মধ্যে আবার শিক্ষা ছুটি এবং বাকীরা প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত আছেন। এছাড়া ৩য় শ্রেণিতে ১২ জন কর্মরত আছে। যার মধ্যে প্রেষণে আছে ২ জন। কর্মরত আছে ১০ জন। এরা হচ্ছে ল্যাব সহকারী ৪ জন, কম্পিউটার অপারেটর ২ জন, স্টোর কিপার ১ জন, ড্রাইভার ১ জন, হিসবারক্ষক ১ জন ও ক্যাশিয়ার ১ জন।
কলেজের হিসাবরক্ষক নীতিশ চন্দ্র রায় বলেন, কলেজটি চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও সরঞ্জামাদীর প্রায় ৯৫ শতাংশ কলেজে পৌঁছে গেছে। বাকী ৫ ভাগ এ মাসেই চলে আসবে। ইতোমধ্যেই ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং চেয়ার, কাঠের টপ চেয়ার, উডেন খাট, ডাইনিং টেবিল, টেবিল ফর পেন্টি, টিভি স্ট্যান্ড, উডেন রাইটিং চেয়ার, রিডিং টেবিল (৪ জন বসার), রিডিং টেবিল (৮ জন বসার), রিডিং চেয়ার (হাতলছাড়া), উডেন আলমারী, বুক সেলফ, ফুল সেক্রেটারিয়েট টেবিল, হাতলযুক্ত কুশন চেয়ার, হাতলযুক্ত কাঠের চেয়ার, ডেস্ক টেবিল, উডেন আলমারী, সোফাসেটসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চলে এসেছে।
খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডি) সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ১২ একর জমির ওপর ১৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে নার্সিং কলেজ এবং ১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আইএইচটি’র নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজের দুই বছরের মাথায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে ৩০ মাসের মধ্যে হোস্টেল ও আবাসিক ভবনগুলো এবং ১৮ মাসের মধ্যে একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কলেজের ৯৫ ভাগ এবং আইএইচটি’র ৪৬ ভাগ শেষ হওয়ার পরও বাকি কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। ২০০৭ সালে নির্মাণ করা হয় একটি গেস্ট হাউজ, অধ্যক্ষের বাসভবন, তিনটি স্টাফ কোয়ার্টার, একটি একাডেমিক ভবন এবং দুটি হোস্টেল ভবন। কলেজটি চালুর জন্য ২০১১ সালে ১৩ জন শিক্ষক পদায়ন করা হলেও বর্তমানে কাগজ-কলমে মাত্র ৫ জন রয়েছে।