প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হোক

0
296

সরকারিভাবে বিদেশ যেতে আগ্রহীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিএমইটি) কেন্দ্রীয় ডাটাব্যাংকে এ নিবন্ধন কর্মসূচির শুরু। দক্ষ, স্বল্পদক্ষ, অদক্ষ এবং পেশাজীবী নারী-পুরুষ উভয়েই এখানে নিবন্ধন করতে পারবেন। আগ্রহীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুইশত টাকা পাঠিয়ে এ নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বছরে প্রতি উপজেলা থেকে ১ হাজার কর্মী বিদেশ পাঠানোর কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী সরকারিভাবে বিদেশে কর্মী পাঠাতে গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকা জেলায় নিবন্ধন শুরু হয়। পরে ২৭ অক্টোবর শুরু হয় নারয়ণগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলার নিবন্ধন। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের বাকি ৬১ জেলার নিবন্ধন শুরু হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে নিবন্ধনকারীর যোগ্যতায় বলা হয়েছে, নিবন্ধনকারী কর্মীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উপরে হতে হবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে নারী গৃহকর্মী হিসেবে যেতে ইচ্ছুকের বয়স ২৫-৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। নিবন্ধনকারীর অন্তত ছয় মাসের বৈধ পাসপোর্ট এবং নিজস্ব মোবাইল থাকতে হবে। নিবন্ধনের আপডেট তথ্য মাঝে মাঝে তাকে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে কর্তৃপক্ষ।
এ নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই নিবন্ধন শুরুর পরে যেকোনো সময় সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি দফতর বা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে। নিবন্ধনের সময় সকল যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা সনদ ডাটাব্যাংকে সংযোজন করতে হবে। এ নিবন্ধনের মেয়াদ হবে দুই বছর। তাই এ সময়ের মধ্যে কোনো যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা অর্জিত হলে তা ডাটাব্যাংকে সংযোজনের সুযোগ রয়েছে। নিবন্ধনকারীর যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকার কাজের ব্যবস্থা করবে। ডাটাব্যাংকে নিবন্ধন কোনোভাবেই নিবন্ধনকারীর বিদেশ যাওয়া নিশ্চিত করবে না। তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। বিদেশ যেতে দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই সর্বসান্ত হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার পথে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিদেশে যাওয়ার পর প্রত্যাশিত কাজ না পাওয়া, প্রতারিত হওয়া, দাসের মতো জীপনযাপন করা, নির্যাতনের শিকার হওয়াসহ বিদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিরে আসার ঘটনা অহরহই ঘটছে। তাই কোনও দালাল বা মধ্যসত্ত্বভোগী ছাড়াই বিদেশ যাওয়ার জন্য সরকারিভাবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এই কার্যক্রমটিরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। এখানে যেন কোনও সুবিধাভোগী বা মধ্যসত্ত্বভোগী শ্রেণি সুযোগ নিতে না পারে সেটিও খেয়াল করতে হবে। পাশাপাশি বিদেশ গমনেচ্ছুদের এই নিবন্ধন সম্পর্কে জানাতে কর্মসূচি থাকতে হবে। এদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা প্রবাসীদের যাত্রার শুরুতে সবরকমের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক।