শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে মুক্তি পনের দাবীতে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে স্বপন নামে এক জেলে ৪ দিন পর সোমবার ভোর রাতে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে। গত শুক্রবার ভোর রাতে বনের তাম্বুলবুনিয়া, কাইততারখাল, ও লেমুয়ারখাল এলাকা থেকে ১৪/১৫ জন জেলেকে বনদস্যু ছোট্ট বাহিনীর দস্যুরা ধরে নিয়ে যায়। দস্যুদের হাতে আটক থাকা জেলেদের নৌকা প্রতি মুক্তিপণ বাবদ
দস্যুরা ২০ হাজার টাকা করে ১০ লাখ টাকা দাবী করেছে । দস্যুরা জেলেদের মারধর করে মোবাইল ফোনে স্ত্রী সহ স্বজনদের দ্রæত টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে আকুতি জানাচ্ছে। এ ঘটনায় বনসংলগ্ন এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেদের মধ্যে নতুন করে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
বন বিভাগ ও জেলেদের মহাজন সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ভোর রাতে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তাম্বুলবুনিয়া বনাঞ্চলের খালে অবস্থানরত কাকড়া ধরা জেলেদের বহরে বনদস্যু ছোট্ট বাহিনীর পরিচয়ে স্বশস্ত্র দস্যুরা পৃথক পৃথক ভাবে জেলেদের উপর হামলা করে। অপহৃতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হচ্ছে শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা জেলে লতিফ মীর (৪৫), রিয়াদুল গাজী (১৮), রুহুল আমীন ফরাজী (২৮), হোসেন(২২) পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের ছালাম হাং (৫০) রতিয়া রাজাপুর গ্রামের স্বপন হাং (২৮) সহ ১৪/১৫ জন। জেলেদের নৌকা প্রতি ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণ করে দস্যুরা। এদের মধ্যে উপজেলার রতিয়া রাজাপুর গ্রামের সুলতান হাওলাদারের পুত্র মহাজন মালেক আকনের জেলে স্বপন ৪ দিন পর সোমবার ভোর রাতে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে
এসেছে। দস্যুরা তাকে মোংলার বৈদ্যমারী সংলগ্ন বনের কিনারে ছেড়ে দেয় বলে উত্তর রাজাপুর এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানিয়েছেন। অপহৃত জেলেরা বন বিভাগ থেকে পাশ নিয়ে সুন্দরবনের নদী ও খালে কাকড়া ধরার জন্য গিয়েছিলো। এদিকে, দস্যুরা সোমবার দুপুরে জিম্মী রুহুলের স্ত্রী রহিমা, জিম্মী ছালামের ছেলে ডালিম ও হোসেনের মাকে মোবাইল ফোনে
মারধরের চিৎকার শুনিয়ে দ্রæত টাকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিতে আকুতি জানিয়েছে। মৎস্য ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান,দস্যুরা তার
কাছে ২ লাখ টাকা সহ অন্য মহাজনদের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবী করেছে । তিনি আরো বলেন,অবস্থা এখন এমন যে সুষ্ঠভাবে ব্যবসা করা যাবেনা।কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলা অপারেশন কর্মকর্তা লেঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মুঠোফোনে জানান, জেলেদের উদ্ধার ও তাদের নিরাপত্তায় কোষ্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।