পিছিয়ে যাচ্ছে বিপিএল!

0
552

স্পোর্টস ডেস্কঃ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসর শুরু হওয়ার কথা আগামী অক্টোবরে। গত ১৮ এপ্রিল বোর্ড সভায় অক্টোবরের শুরুতে বিপিএল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিসিবি। সেদিন বোর্ড সভা শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমনটাই জানিয়েছিলেন।

তবে সর্বশেষ খবর, বিপিএলের ষষ্ঠ আসর পিছিয়ে যেতে পারে। ঘোষিত সময়ে বিপিএল মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা কমে এসেছে। টুর্নামেন্টটি পেছানোর আলোচনাই এখন সরব। আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্ট।

মূলত জাতীয় নির্বাচনের কারণেই বিপিএল পেছানোর আলোচনা উঠে এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে হবে জাতীয় নির্বাচন। সময়সূচি অনুযায়ী তার এক মাস আগেই শেষ হওয়ার কথা বিপিএলের ষষ্ঠ আসর। কিন্তু দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তখন বিপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টের নিরাপত্তা প্রদান চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যস্ত থাকবে। বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ থাকে বলে বিপিএলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সমমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই প্রয়োজন হয়।

এসব ছাড়াও বিপিএলের কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা সরাসরি জাতীয় নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকবেন। আর নির্বাচনের একমাস আগে তাদের পক্ষে বিপিএলে ব্যস্ত থাকাটা কঠিন হয়ে পড়বে। বিসিবিসূত্রে জানা গেছে, এসব বিষয় সামনে উঠে আসার কারণেই বিপিএল পেছানোর আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।

বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস গতকাল বলেছেন, বিপিএল টুর্নামেন্ট পেছানোর কথা উঠেছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো।

গতকাল জানতে চাইলে জালাল ইউনুস বলেন, ‘পেছানোর সম্ভাবনা আছে কিন্তু এটা এখনো ঠিক হয়নি কিছু। অনেকে আবার নিরাপত্তার কথাটা চিন্তা করতেছে, নির্বাচনের আগে আগে। এই জিনিসটা মাথার মধ্যে আছে। তবে এখন এগুলো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বা এখনো ঠিক হয়নি। আর জানুয়ারিতে তো আবার জিম্বাবুয়ে আসবে। এজন্য অনেক কিছুই চিন্তা-ভাবনা করতে হচ্ছে। কিছু চ্যালেঞ্জ আছে আগে (জাতীয় নির্বাচন) করার ব্যাপারে।’

নির্বাচনের আগে আগে বিপিএল খেলার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। আর এ ভাবনা থেকে বিপিএল পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিসিবির এ পরিচালক বলেছেন, ‘পরিষ্কার এখনো হয়নি। কিন্তু এমন কথা একবার উঠছে। অনেক জায়গা থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে কীভাবে করা যাবে।’

বিপিএল পেছানোর আলোচনা সম্পর্কে অবহিত আছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও। টুর্নামেন্ট পিছিয়ে যাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের প্রধান নির্বাহী ইশতিয়াক সাদেক গতকাল ইত্তেফাককে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমিও শুনতে পেলাম। গতকাল রাতেই এমন শুনছি। আসলে বোর্ড যেভাবে করবে ওভাবেই। আমাদের নিশ্চিত কিছু জানানো হয়নি এখনো।’

বিপিএলের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের উপদেষ্টা পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তাফা কামাল। তার পরিবারই দলটির মালিক। কুমিল্লা থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবেন আইসিসি ও বিসিবির এই সাবেক সভাপতি। খুলনা টাইটান্সের মালিকদের অন্যতম কাজী নাবিল আহমেদ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। রাজশাহী কিংসের মালিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও রাজশাহী থেকে নির্বাচনে অংশ নিবেন। সিলেট সিক্সার্সের মালিক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের পরিবার। তাদেরও নির্বাচনী ব্যস্ততা থাকবে নিশ্চিতভাবেই। তা ছাড়া খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন।

সবমিলিয়ে জাতীয় নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিপিএল পিছিয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।