পাকিস্তানের রাজনৈতিক সঙ্কট কোথায় গিয়ে থামবে?

0
119
গণপরিবহনে নারী হয়রানি অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না কেন?

টাইমস সম্পাদকীয় : ‘নো বল’ কিংবা ‘সুইঙ্গার’ অথবা ‘ইয়র্কার’ যাই বলা হোক না কেন, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে পাশ কাটিয়ে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার পদ কয়েকদিনের জন্য ঠেকাতে পারলেও দেশটিতে রাজনৈতিক সঙ্কট দিনে দিনে আরও জটিল হয়েছে। ক্ষমতার লড়াই যেমন ধীরে ধীরে রাজপথে উত্তাপ ছড়াতে পারে, তেমনি আইনি লড়াই দেশটির জন্য বয়ে আনতে পারে অনাকাক্সিক্ষত ফল। বিরোধীরা বলছে, তারা কোনভাবেই বর্তমান পরিস্থিতির শেষ না দেখে ছাড়বে না। রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর সময় পূর্ব নির্ধারিত মস্কো সফর করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দাও জানায়নি ইসলামাবাদ। এরপর ধীরে ধীরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। সংসদে বিরোধীরা ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। পরে টানা উত্তেজনার মধ্যে আনা সেই অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার। বিষয়টি এখন আদালতের এখতিয়ারে। যদি আদালত ইমরানের উদ্যোগকে মেনে নেন, তাহলেও তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ আটদিন। আর যদি আদালতের রুলিং ভিন্ন কিছু হয়, তাহলেও ক্ষমতার লড়াইয়ের সমাধান হয়ে যাবে, এমন বলা যাবে না। আর পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর চাওয়া- না চাওয়ার উপরও নির্ভর করছে অনেককিছু। দেশটির ইতিহাস তাই বলে। রাষ্ট্রীয়ভাবে পাকিস্তানে ইমরান খান সরকার বর্তমানে মার্কিন বলয় থেকে সরে গিয়ে স্পষ্ট চীন-রাশিয়ার দিকে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের ভেতরে আরেকটি পাওয়ার হাউস রয়েছে, যারা সশস্ত্র বাহিনী। তারা মার্কিন প্রভাবিত। রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে ইমরান খানের অবস্থানকে ভাল চোখে দেখেনি তারা। পাকিস্তানের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, তাদের পুরো সময়ের প্রায় অর্ধেকজুড়ে ক্ষমতায় ছিল সামরিক বাহিনী, আর অর্ধেক সময় ছিল রাজনৈতিক দলগুলো। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক দলগুলো কার্যত ভাগাভাগি করে পরিচালনা করেছে। তবে, সবসময়ই শেষ কথা ছিল সামরিক বাহিনীর। এমনকি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে না জানিয়ে কারগিল যুদ্ধও বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ইমরান খান তাকে সরাতে বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বারবার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া সফরে যাওয়ার কারণে একটি ‘প্রভাবশালী’ দেশ পাকিস্তানের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে সরাতে চাইছে। কিন্তু তার কোন প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি। এবং দেশটি এখন আগাম নির্বাচনের দিকে। তাও এমন এক সময়ে যখন পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবেও বেশ চাপের মুখে। এমনিতেই পাকিস্তান উচ্চ মুল্যস্ফীতিতে নাস্তানাবুদ। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি তালেবান নিয়েও আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের চাপে তারা। সময়ই বলে দেবে কোন পথে চলে তারপরে থামবে পাকিস্তান।