পাইকগাছার কপিলমুনিতে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণে অন্তস্বত্ত্বা, বিয়েতে নিষ্পত্তি!

0
153

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে ৭ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণে অন্তস্বত্ত¡ার ঘটনায় অবশেষে ধর্ষক দু’সন্তানের জনক লম্পট আব্দুল্লার (৩৫) সাথে ঐ ছাত্রীর পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ঝামেলা এড়াতে আইনের আশ্রয়ের পরিবর্তে স্কুল ছাত্রীর অসহায় পরিবার ধর্ষক পক্ষের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। এর আগে এনিয়ে বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইনে খবর প্রকাশে ধর্ষক আব্দুল্লার মামা সাবেক ইউপি সদস্য’র মধ্যস্থতায় ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রীর নামে ৮ কাঠা জমি ও ২ লক্ষ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগরে গ্রামের ইউসুফ মোড়লের ছেলে আব্দুল্লা মোড়ল প্রতিবেশী জনৈক হবি মোড়লের মেয়ে করোনাকালে অটোপাসে ৭ম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়েকে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণ করে। এতে ঐ ছাত্রী ৫ মাসের অন্তস্বত্ত¡া হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ধর্ষকের পরিবার স্কুল ছাত্রীর গর্ভের ভ্রæণ নষ্টসহ স্থানীয়ভাবে মিমাংশার অপচেষ্টা চালায়। তবে বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হলে বাধ্যতামূলক বিয়ের সিদ্ধান্তে ঐক্যমত হয়।
এদিকে বিয়ের পর থেকে ঐ কিশোরী কখনো পিত্রালয় আবার কখনো স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করছে। পিত্রালয় থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে স্বামীর বাড়ী। যে বয়সে তার বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা। অবসরে সহপাঠীদের সাথে খেলা-গুজব করে বেড়ানোর কথা। ঠিক সেই বয়সে নিজের অজান্তেই মা হওয়ার প্রহর গুনছে। নিজের শারিরীক পরিবর্তনে সহপাঠীসহ লোক-লজ্জায় দু’বাড়ির বাইরে বেরুতে পারেনা সে। অন্যদিকে কোন পক্ষ আইনের আশ্রয় না নেয়ায় ধর্ষক দিব্বি বুক ফুলিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সূত্র জানায়, আব্দুল্লাহ প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে। তার নিকটাতœীয়রা স্থানীয় ধনাঢ্য। অন্যদিকে মেয়ে পক্ষ দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের হওয়ায় তারা বিষয়টি নিয়ে থানা কিংবা আদালতের আশ্রয় না নিয়ে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্তে ঐক্যমতে পৌছেছে। সূত্র জানায়, আব্দুল্লাহ দু’ সন্তানের জনক। ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রীর সমবয়সী তার একটি ছেলে রয়েছে।
এদিকে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দিলেও মাত্র ১২ বছরের শিশুর সাথে মধ্য বয়সীর বিয়ে রেজিস্ট্রি বা নিবন্ধন যোগ্য নয়। তাছাড়া রেজিস্ট্রিবিহীন বিয়ে অবৈধ হলেও কিভাবে তারা তাদের বিয়ে দিয়েছে এনিয়েও রীতিমত নানা প্রশ্ন এলাকাবাসীর মাঝে বার বার ঘুর-পাক খাচ্ছে। এব্যাপারে আব্দুল্লাহ মোড়ল মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানায়, বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংশা হয়ে গেছে।
মধ্যস্থতাকারী সাবেক ইউপি সদস্য ও ধর্ষকের মামা মো: বাদল মোড়লের কাছে বিষয়টি জানতে বারংবার তার মোবাইলে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বাল্য বিবাহ রোধে ব্যাপক তৎপরতা পরিলক্ষিত হলেও বিষয়টি নিয়ে যেন মাথা ব্যথা নেই কারোরই। সর্বশেষ ঘটনায় এলাকায় বাল্যবিবাহকে বহুলাংশে উস্কে দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।