পাইকগাছার কপিলমুনিতে কম্পিউটারের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভষ্মিভূত

0
206

আবারো বেঁচে থাকার স্বপ্নভঙ্গ প্রতিবন্দ্বী তৈয়েবুরের


শেখ নাদীর শাহ্::
আবারো বেঁচে থাকার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে প্রতিবন্দ্বী তৈয়েবুরের। রবিবার গভীর রাতে উপজেলার কপিলমুনিতে নিউ কপোতাক্ষ কম্পিউটারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ল্যাপটপ,ডেস্কটপ,ফটোকপি মেশিন,স্ক্যানার,প্রিন্টার, লোডের ৫টি মোবাইল ও নগদ টাকাসহ অন্তত ৮ লক্ষ টাকার মালামাল পুঁড়ে সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়েছে। এ ঘটনায় রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শারিরীক প্রতিবন্দ্বী তৈয়েবুর ও তার পরিবার।

জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির নাছিরপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে তৈয়েবুর। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তৈয়েবুরের অবস্থান ৪র্থ। ছোট বেলায় রিকেটে আক্রান্ত হয়ে তার দু’টি পা ও দু’টি হাত বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। এরপর মা-বাবার কোলে চড়ে স্থানীয় কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া-লেখা করে। পরে প্রাইভেটে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। নিজে শারিরীক প্রতিব›দ্বী হলেও ছোট বেলা থেকে তৈয়েবুর কারোর বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে চায়নি। প্রথমত বাদাম বিক্রি করে সংসারে সহযোগিতা ও পরে স্থানীয় একটি ট্রেনিং সেন্টার থেকে কম্পিউটার ট্রেনিং নিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি ডেক্সটপ ও প্রিন্টার কিনে ভাড়ার ঘরে শুরু করেন ব্যবসা। এরপর বড় ভাইকে সেখানে পুনর্বাসনের পাশাপাশি ছোটভাইকে উচ্চ শিক্ষায় সহযোগিতা করছেন। বিয়ে করেছেন। দাম্পত্য জীবনে তিনি দু’পুত্র সন্তানের জনক। পরিবারের প্রায় সকলকে সুন্দর আগামীর পথ প্রদর্শক হলেও নিজের সংসার চলত কম্পিউটারের যৎসামান্য আয়ে। কয়েক মাস আগে দোকান চুরির ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হন তিনি। এরপর সর্বশেষ রবিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন স্বপ্নের নিউ কপোতাক্ষ কম্পিউটারে আগুন লাগার খবর পান। প্রায় ১ টার দিকে দোকানে পৌছানোর আগেই সবকিছু পুড়ে ভষ্মভিূত হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। তৈয়েবুর জানান, দোকানে থাকা উদ্দীপন সংস্থার ১টিসহ ২টি ল্যাপটপ, ২টি ডেক্সটপ, ১টি ফটোস্ট্যাট,২টি স্ক্যানার, ৫টি লোডের সিমসহ ৬টি মোবাইল,২টি ক্যামেরা, সিসি ক্যামেরা, বিকাশের নগদ ২৫ হাজার টাকা আসবাবপত্রসহ অন্তত ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ভষ্মীভূত হয়েছে।

তৈয়েবুর জানান, রাত ১২ টার পরে তিনি দোকান থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন। এরপর রাত ১টার দিকে মোবাইলের মাধ্যমে আগুন লাগার খবর পান তিনি।

খবর পেয়ে রাতেই কপিলমুনি ফাঁড়ির পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এব্যাপারে তৈয়েবুরসহ এলাকাবাসী তাকে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে ন্যুন্যতম সহযোগিতার জন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।