পতাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত: নিজ নিজ সীমা রেখায় চলবে মিলন মেলার তরী, রাত পোহালেই ষষ্টীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব

0
304

আব্দুর রব লিটু, দেবহাটা: রাত পোহালেই ষষ্টীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। বিজিবি- বিএসএফ এর পতাকা বৈঠক। নিজ নিজ সীমা রেখায় মিলন মেলার তরী চলার সিদ্ধান্ত। শারদীয় র্দূগা পুজা শান্তিপর্ূূণ ভাবে সম্পন্ন করতে পতাকা বৈঠক করছেনে বাংলাদশে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বুধবার বেলা ১১টায় ভারতের টাকি পৌরসভা এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থতি ছিলনে বাংলাদেশের পক্ষে দেবহাটার ইউএনও’র প্রতিনিধি উপজলো সিনিয়র মৎস্য অফিসার বদরুজ্জামান, দেবহাটা থানার অফিসার ইনর্চাজ বিপ্লব কুমার সাহা, ওসি (তদন্ত) উজ্বল মৈত্র, টাউনশ্রীপুর কোম্পানি কমান্ডার মোত্তালিব হোসেন, ভারতের টাকি পৌর সভার মেয়র সোমনাথ মুর্খাজী, হাসনাবাদ বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার বিনোদ সিং, দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মাহাবুবুর রহমান বাবলু প্রমুখ। পতাকা বৈঠাকে উভয় দেশে সীমানাবর্তী ইছামতি নদীতে স্ব স্ব কিনারায় দশমীর উৎসব পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সুতরাং এবারো দূর্গা প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে থাকছে না দুই বাংলার মিলন মেলা। থাকছে শুধু চোখের ইশারা আর হাত ছানি। এদিকে রাত পোহালেই (শুক্রবার) ষষ্টীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পুজা। দেবহাটায় বর্নিল আয়োজনে প্রস্তুত পুজা মন্ডপ গুলো। শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে নানান সাজে সেজেছে ২১টি দূর্গা প্রতিমার মন্ডপ। দীর্ঘ ১বছর পর দূর্গা মায়ের আগমনের অপেক্ষায় সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়। এবার দূর্গা মায়ের আগমন এবং প্রস্থান উভয়ই ঘটবে ঘোড়ায় চড়ে। সব কিছু লন্ড ভন্ড করে সকল অশুভ শক্তিকে বিন্যাশ করতেই এবার দেবী দুর্গার আগমন। এদিকে দুর্গা মায়ের আগমন উপলক্ষে মন্ডপ গুলো সেজেছে নানান সাজে। কোন প্রকার নাশকতা এড়াতে এবারের দূর্গা পূজায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপে প্রশাসন দিবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা। প্রত্যকটি মন্দিরের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পাশাপাশি কয়েকটি মন্ডপে থাকছে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কড়া নজরদারী। সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীরা পরিবারের কেনা কাটার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করে ফেলেছে। শুরু হয়েছে প্রতিটি মন্দিরে আনন্দ মূখর পরিবেশে আলোর ঝলকানি। সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলার পূজা মন্ডপ গুলোতে অত্যন্ত ব্যস্ততার সাথে প্রতিমা শিল্পীরা ইতিমধ্যে শেষ করেছে প্রতিমা তৈরী ও রং তুলির কাজ। বিশ্ব শান্তির কল্যানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ০৪ অক্টোবর (শুক্রবার) ষষ্ঠীতে দেবীর দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ০৫ অক্টোবর (শনিবার) সপ্তমী, ০৬ অক্টোবর (রবিবার) অষ্টমী ও কুমারী পূজা, ০৭ অক্টোবর (সোমবার) মহা-নবমী এবং ০৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দশমীতে বিজয়ার মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসবে দূর্গা মাকে বিসর্জন দিয়ে বিদায় জানাবেন। এবারে দেবী দুর্গা ঘোড়ায় মর্ত্যলোক থেকে পৃথিবীতে আসবেন এবং ঘোড়ায়ই চড়ে আবার কৈলাশ পর্বতে স্বামী গৃহে ফিরে যাবেন। দেশের অন্নন্য স্থানের মত এবার দেবহাটায় ও থেমে নেই দূর্গা উৎসব। এদিকে উপজেলার ২১টি পূজা মন্ডপের মধ্যে অধিক গুরুত্ব পূর্ণ ধরা হয়েছে গাজীর হাট সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ। এছাড়া সুবর্ণবাদ সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, দক্ষিন পারুলিয়া জেলিয়াপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, সখিপুর পালপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপকেও গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়েছে। তাছাড়া দূর্গা পূজা অনুষ্টিত হবে বহেরা সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, কুলিয়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পশ্চিমপাড়া দূর্গা পূজা মন্ডপ, বালিয়া ডাঙ্গা দূর্গা পূজা মন্ডপ, হিজলডাঙ্গা দূর্গা পূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পূর্বপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, সন্ন্যাসখোলা সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, উত্তর পারুলিয়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, নোড়ারচক সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, বড়শান্তা সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, কোমরপুর উত্তরপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, মাঝ পারুলিয়া দাসপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, কোঁড়া পাকড়াতোলা সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, দেবহাটা ফুটবল মাঠ সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, দেবাহাটা বাজার সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ, টাউনশ্রীপুর সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপ ও টাউন শ্রীপুর পালপাড়া সার্বঃদূর্গা পূজা মন্ডপে। তবে এবার দূর্গাপুজার গুরুত্বপূর্ন দিনগুলোতে বিশেষ করে উপজেলার সখিপুর লাইট হাউজ সিনেমা হল থেকে শুরু করে পারুলিয়া প্রধান সড়কের বদরতলা-ইছামতি সংলগ্ন মোড়,চারা বটতলা পুজামন্ডব সংলগ্ন প্রধান সড়ক এবং গাজির হাট বাজার সংলগ্ন প্রধান সড়কে প্রশাসন দিবে বাড়তি নিরাপত্তা।এব্যাপারে দেবহাটা পুজা উৎযাপন পরিষদের সুভাস চন্দ্র ঘোস জানান, এবারের দূর্গা পুজায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনি সার্বিক সহযোগীতা করছে। তাছাড়া উপজেলা পুজা উৎযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দীর কমিটি আবার স্বেচ্ছা সেবক নিয়ে সার্বক্ষনিক নজর রাখছে।এ পর্যন্ত কোথাও কোন অ-প্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।আমি আশা করি বরাবরের মত এবারও সুন্দর সু-শৃঙ্খল ভাবে পুজা সমপ্ত হবে। এব্যাপারে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা জানান, দূর্গা উৎসবকে ঘিরে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে সে জন্য মন্ডপ গুলোতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষ্কাারী বাহিনী, আনসার, গ্রামপুলিশ, স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি সার্বক্ষনিক মোবাইল টিম বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শনের মাধ্যমে নজরদারি রাখবে। এছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের দিন দেবহাটার ঐতিহ্যবাহী যে মিলন মেলা হয় সেটিও শান্তিপূর্ন ভাবে সম্পন্ন করতে বাংলাদশে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর পতাকা বৈঠক হয়েছে।