পচা পানিতে দিশেহারা শিক্ষার্থীরা

0
540
পচা পানিতে দিশেহারা শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্কঃ

বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে দাশেরজঙ্গল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাজারের ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও বৃষ্টির পানি আটকা পড়ে ব্যাহত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্যালয় মাঠে জমে থাকা ময়লা, পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি অতিক্রম করে বই-খাতা, স্কুল ব্যাগ নিয়ে শ্রেণি কক্ষে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে নানা ধরনে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

গোসাইরহাটের দাশেরজঙ্গল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াহিদা আঞ্জুমান মুক্তা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদ সরদার জানান, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলা সদরের পৌরসভার অন্তর্গত ২ নম্বর দাশেরজঙ্গল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গোসাইরহাট উপজেলার ৯৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে এটি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। এ বিদ্যালয়টি দাশেরজঙ্গল বাজারের পাশেই অবস্থিত। বিদ্যালয়টির আশপাশের পুকুর ডোবা ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। বিদ্যালয়ের পাশেই মাছ ও সবজি বাজারের ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ঢুকে স্কুলের মাঠটি সয়লাব হয়ে যায়। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় মাঠের এ আবদ্ধ পানি পচে দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। দূষিত এ পানির কারণে শিক্ষার্থীরা সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়াসহ নানা প্রকার পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৫ শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের মধ্যে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থতার কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। প্রতিদিনই বেশকিছু শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকছে বিদ্যালয়ের এ পরিবেশের কারণে। আগামী ১২জুলাই শুরু হবে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার্থীদের মডেল টেস্ট পরীক্ষা। এ পরিবেশে শিক্ষার্থীরা কিভাবে পরীক্ষা দেবে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন মৃধা জানান, বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকার বিষয়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা, সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয় মাঠটি পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এবং আশেপাশের পুকুর ডোবা ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পানির জলাবদ্ধতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মাঠে মাটি ভরাট করা না হলে এ সমস্যা দূর হবে না।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষক আ. ছাত্তার মিয়া বলেন, আবদ্ধ ময়লা ও দুর্গন্ধ পানির কারণে চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা, তাতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কমে গেছে। বিদ্যালয় মাঠে পানি থাকার কারণে খেলাধুলা এবং দৈনন্দিন সমাবেশে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমপি মহোদয়ের কাছে বিষয়টি জানাতে বলেছি। আগামী জেলা উন্নয়ন সভায় বিষয়টি তুলে ধরে স্থায়ীভাবে সমাধানের চেষ্টা করবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর এম সেলিম শাহ নেওয়াজ বলেন, পৌরসভার প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি, বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।