নির্বাচনী প্রচারণায় আ.লীগ, গ্রেফতার আতংকে বিএনপি

0
844

আজিজুর রহমান, খুলনাটাইমস :
নির্বাচনী প্রচারণার শেষ পর্যায়ে মাঠে সক্রিয় খুলনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা। অন্যদিকে বিএনপির প্রচারণা তেমন দৃশ্যমান না হলেও গ্রেফতার আতংকে নেতাকর্মীরা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এই আসনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ স্পষ্ট। ওই আসনে মনোনয়ন পাওয়া সরকারদলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় নির্বাচনী পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা। কিন্তু বিএনপির চিত্র ভিন্ন। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান। তাঁর নামে রয়েছে প্রায় হাফডজন মামলা।

দাকোপ উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন এবং বটিয়াঘাটা উপজেলা সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৫৬ জন। মোট ভোটারের মধ্যে বটিয়াঘাটায় ভোটসংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৬ আর দাকোপে ভোটসংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ২০ জন। মোট ১০৭ টি ভোটকক্ষে এসকল ভোটারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

এবার ওই আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্ধীতা করছেন। মূল লড়াই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থীর মধ্যেই হবে বলে ধারণা এলাকাবাসীর। নির্বাচনী ওই আসনের কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সাংসদ পঞ্চানন বিশ্বাসের কর্মী-সমর্থকেরা বিভিন্ন এলাকায় মিছিল করছেন। আবার বিকেল হলেই শুরু করেন নির্বাচনী জনসভা। সেই সভায় যোগদান করতে মাথায় গামছা পেঁচিয়ে নৌকা প্রতীক তৈরি করে মিছিল করেন তারা।

মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে বটবুনিয়ায় অনুষ্ঠিত জনসভায় পঞ্চানন বিশ্বাস তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যবস্থার পাশাপাশি মাদকাসক্তি সমস্যা নিয়ে কাজ করার কথা বলেন।
দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ রায় খুলনাটাইমসকে বলেন, অপরাধমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত থাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। যারা পেট্রলবোমায় মানুষ পুড়ে মেরেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বিএনপির চিত্র

বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন হামলা, মামলা, পুলিশের হয়রানিমূলক গ্রেফতার ও আতংকের ভয়ে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন সক্রিয়ভাবে ভোটের মাঠে নেই। তবে নেতাকর্মীরা আড়াল থেকেই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে জড়ালোভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু বড় ধরণের কোনো সভা, সমাবেশ এখনো পর্যন্ত তারা করেনি।

এদিকে বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) চালনা ডাকবাংলোর মোড়ে থাকা প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পেনা পোড়ানোর অপরাধে স্থানীয় আ’লীগ নেতার দায়েরকৃত মামলায় পৌর কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব কাজীসহ ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগেও ওই মামলায় পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান থানা পুলিশ।

বিএনপির অভিযোগ, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এসব মামলার ভয়ে আতষ্কে রয়েছে তাঁরা। তাই এখন ঠিকমত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছে কর্মী-সমর্থকেরা। এমনকি পোলিং এজেন্টও পাচ্ছে না দলটি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমীর এজাজ খান খুলনাটাইমসকে বলেন, নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও পুলিশ আতংকে দৌড়ের ওপর আছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ না থাকায় কীভাবে তাঁরা প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন তা নিয়ে শঙ্কা। তিনি বলেন, বিএনপিকে বাইরে রেখে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় বর্তমান সরকার।
তিনি আরো বলেন, যদি সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ, কেন্দ্রদখল ও ভোট কারচুপি না হয় তাহলে শতভাগ আশাবাদী ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস বলেন, আমি সামান্য একজন কর্মী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি এর সম্মান রক্ষার জন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষের মাঝে যে সাড়া দেখা গেছে তাতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত।
তিনি বলেন, বিজয়ী হলে আ’লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে উপকূলীয় একালার অবহেলিত জনপদ উন্নয়নসহ এলাকার সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল করবো।