নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর জরুরি

0
230

খুলনা টাইমস:
কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখ মানুষকে ভাসানচরের অধিকতর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রিয়জনের লাশ আর পুড়তে থাকা ভিটেমাটি পেছনে ফেলে প্রাণ হাতে করে তিন বছর আগে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গারা ভাসানচরের নতুন ঠিকানায় নিজেদের জন্য আলাদা ঘর পাচ্ছে, আছে রান্নার ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, পানি আর পয়োনিষ্কাশন সুবিধা। সেই সঙ্গে আছে খেলার মাঠ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। এদের অনেকেই এখন আত্মীয়-স্বজনদেরও কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিয়ে আসার কথা ভাবছেন। কিন্তু চিহ্নিত কিছু মহল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে কৌশলে নানামুখী তৎপরতায় লিপ্ত বলে অভিযোগ উঠেছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রোহিঙ্গা বিষয়ে এমন অভিযোগ সবচেয়ে বেশি উঠেছে বিভিন্ন এনজিও এবং আইএনজিওর বিরুদ্ধে। ওদিকে টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড় কেটে নতুন করে বনভূমি জবরদখল করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য পানি সংরক্ষণাগারের নাম দিয়ে পাহাড়ের হাতি চলাচলের পথ অবরুদ্ধ করেই স্থাপন করা হচ্ছে ড্যাম। এতে করে টেকনাফ বনাঞ্চলের হাতির অস্তিত্ব বিপন্নেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশি-বিদেশি নানা সংস্থার পাতানো ফাঁদে পা দিচ্ছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও ক্যাম্প প্রশাসন পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে তারা এসব কাজে বাধা দেওয়ার চেয়ে বরং উল্টো সহযোগিতা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংরক্ষিত বনভূমিতে হাতি চলাচলের পথে স্লুইস ও ড্যাম স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে।
এমনিতেই বাংলাদেশের কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাহাড়ের বড় এলাকাজুড়ে এখন রোহিঙ্গাদের বসতি। আর বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এতে পরিবেশ ও প্রাণিবৈচিত্র্য ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে। ছোট-বড় হাজার হাজার গাছ কাটা হয়েছে। কক্সবাজার বন বিভাগের পুরনো এক গবেষণা বলছে, উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় বন ধ্বংসের কারণে পরিবেশগত ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি। শুধু পরিবেশের ক্ষতিই নয়, রোহিঙ্গারা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও হুমকি হয়ে উঠেছে। এলাকার শান্তি নষ্ট হচ্ছে। মাদক চোরাচালান বেড়েছে। বেড়েছে ক্যাম্পভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধমূলক তৎপরতাও। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আশা করি, শিগগিরই এ বিষয়ে একটি কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান হবে।