নওয়াপাড়ায় আবাসিক এলাকায় ফেলা হচ্ছে বর্জ্য; ভোগান্তির শেষ নেই

0
371

শেখ জাকারিয়া রহমান, অভয়নগর:
বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। তাই বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আবাসিক এলাকায় সড়কের পাশেই। সেগুলো কখনোই সরানো হয়না। দুর্গন্ধে এলাকার মানুষের বসবাসের দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে মানুষ নাক চেপে চলাচল করে। এই চিত্র যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভার।
নওয়াপাড়া বাজারের প্রাণকেন্দ্র রেলষ্টেশনের পাশ দিয়ে চলে গেছে নওয়াপাড়া বাইপাস সড়ক। ওই সড়কের পাশেই রেলওয়ের জায়গায় ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। পাশেই বিশাল বিশাল ইমারত সেখানে মানুষের বসবাস। তাছাড়া বর্জ্যরে পাশে রেলওয়ের বস্তীতে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বসবাস করে । ওই আবাসিক এলাকায় সড়কের পাশেই বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। নওয়াপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকার বর্জ্য সংগ্রহ করে এখানে ফেলছে। বর্জ্যরে দুর্গন্ধ বাতাসের সাথে মিশে চারিপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারি সাধারন মানুষ ও শিক্ষার্থীরা নাকে কাপড় দিয়ে চলাচল করে। বাইশ বছরেও নওয়াপাড়া পৌরসভা বর্জ্য ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা নির্ধারন করতে পারেনি।
যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভা ১৯৮০ সালে ঘোষনা হলেও কোন গেজেট প্রকাশিত হয় না। ১৯৯৬ সালে নওয়াপাড়া পৌরসভাকে গেজেট আকারে প্রকাশের পর পৌরসভা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ১৯৯৭ সালের ১৬ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেনীর নওয়াপাড়া পৌরসভা হিসাবে কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০২ সালে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পরবর্তীতে ২০০৫ সালে সকল শর্ত পুরণ করে প্রথম শ্রেনীতে উন্নীত হয়। দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেলেও নওয়াপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন স্থান করেনি। যে কারনে পৌরবাসির ভোগান্তির শেষ নেই।
নওয়াপাড়া রেলওয়ে বস্তীর বাসিন্দা শরীফা বেগম (৪০) বলেন “ ময়লা ফেলার কারণে খেতে পারিনা। দুর্গন্ধে বমি আসে। আমার বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
পান দোকানদার ইব্রাহীম হোসেন (৫০) বলেন “ দুর্গন্ধে দোকানদারী করা যায়না। সবসময় গালে পান রেখে দোকানদারী করতে হয়। কেউ দাড়ায় কেনাবেচা করতে চায় না। এটা বন্ধ করা দরকার।
ওই এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সৈয়দ ইব্রাহীম এরতেজা (৩২) বলেন “ ময়লা ফেলার কারনে এত দুর্গন্ধ যে তিনবেলা রুচিসম্মত খেতে পারিনা। আত্বীয়রা বাড়িতে আসলে লজ্জা পাই। শীতেতো এর তীব্রতা বাড়বে সেসময় কিভাবে বসবাস করবো। গন্ধের কারনে ওই সড়কে কোন যানবাহন যাত্রী উঠাতে চায় না। কতৃপক্ষকে দ্রুত সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ করছি।
নওয়াপাড়া মডেল স্কুলের শিক্ষার্থী আফরিন আশরাফ দীঘি জানায়, স্কুলে যাওয়ার সময় দমবন্ধ করে ওই পথ দিয়ে যাই। তারপরও বমিবমি আসে। ওখানে ময়লা না ফেললে ভাল হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক শেখ মো: নাজমুল হুদা বলেন “ এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তারপর পৌরসভার বিষয়টি আমি পৌর কতৃপক্ষকে বলবো। সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে তারা যেন সড়কের পাশে আবাসিক এলাকায় যেন ময়লা না ফেলে।”
নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত দাস শান্ত বলেন “বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। বর্জ্য ফেলার জন্য দ্রুতই নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারন করা হবে।”