ধান বিজ্ঞানী তমাল লতা আদিত্যর মৃত্যু, ব্রি পরিবারের শোক

0
176

টাইমস ডেস্ক:
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ও প্রখ্যাত ধান বিজ্ঞানী ড. তমাল লতা আদিত্য ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার অকাল প্রয়াণে ব্রি পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মার চিরশান্তি কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে ব্রি পরিবার। ড. তমাল লতা আদিত্য ৩১ অক্টোবর ১৯৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার কুন্ডল বালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৃত্যুঞ্জয় আদিত্য এবং মাতার নাম সুনীতি রাণী আদিত্য। তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ২০০২ সালে ইম্পেরিয়াল কলেজ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদ প্রজনন এবং বায়োটেকনোলজি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২১ নভেম্বর ১৯৯৪ সালে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে ব্রির উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ০৯ আগস্ট ২০১০ সালে মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে পদন্নোতি লাভ করেন এবং ২ অক্টোবর ২০১৭ সালে পরিচালক গবেষণা (চলতি দায়িত্ব) পদে যোগদান করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। ধান প্রজননবিদ হিসেবে অনেকগুলো ধানের জাত উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বিশেষ করে ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৫৮, ব্রি ধান৬৩, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৮০, ব্রি ধান৮১, ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৮, ব্রি ধান৯০ এবং ব্রি ধান৯৫ ধানের জাতগুলো উদ্ভাবনে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন। এছাড়াও ব্রি ধান৪৬, ব্রি ধান৪৯, ব্রি ধান৫০, ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৭১ ধানের জাতসমূহ উদ্ভাবনে তার অবদান ছিল। ধান গবেষণায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ড. তমাল লতা আদিত্য পৃরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া তার নেতৃত্বে ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার অর্জন করে প্রজনন বিভাগ। ড. আদিত্য আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জয়া আলোকিত নারী ২০২০ সম্মাননায় ভূষিত হন। ড. তমাল লতা আদিত্য ব্রির গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে তার ৩০টির বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি পেশাগত কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, ভারত, নোপাল, ভুটানসহ পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র, চিকিৎসক স্বামীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ধান গবেষণার মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে তার অসামান্য অবদান জাঁতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে।