দেশে গড়ে প্রতিদিন গড়ে ২৯ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে

0
447

টাইমস প্রতিবেদন :
২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত, গত সাড়ে সাত বছরে সারাদেশে ৮০,১৮৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। অর্থাৎ, গড়ে দৈনিক ২৯ জনেরও বেশী। ২০১৭ সালের প্রথম ছয় মাসে ২,৯৭৮ জন আত্মহত্যা করেছেন, যার মধ্যে ১,৭৮৯ জন নারী। এই সব আত্মহত্যার মূল কারণ হিসেবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অবমাননা ও অবহেলা, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ, যৌন নির্যাতন, মিথ্যা অপবাদ বা সন্দেহ, অনৈতিক সম্পর্ক ইত্যাদি চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা আত্মহত্যা করছেন, তাদের বেশীর ভাগেরই বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে। আজ বুধবার সকালে নগরীতে “নারী নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা: হত্যার সামিল’-শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নারীদের উপর শারীরিক, মানসিক, যৌন নির্যাতন ও ইভ টিজিংয়ের ঘটনা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবার কারণে এবং পরিস্থিতি সামাল না দিতে পেরে তাদের আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরণের আত্মহত্যাকে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। যেহেতু মৃত্যুটি স্বাভাবিক নিয়মে ঘটে না, সেহেতু এটা যুক্তিসংগতও বটে। কিন্তু মামলার ক্ষেত্রে সেই আত্মহত্যার সাথে যখন তারা ‘প্ররোচনা’ শব্দটি যুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে, তখন বিচারিক প্রক্রিয়ায় ও সামাজে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, খুলনার স্কুল ছাত্রী চাঁদনীর আত্মহত্যার ক্ষেত্রে আসামীদের বিরুদ্ধে ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। আইনী ভাষার এই শব্দটি দ্বারা কোথায় যেন অভিযোগটি হালকা হয়ে যায়। ‘প্ররোচনার’ শাব্দিক অর্থ উৎসাহ বা উসকানি দেয়া; অর্থাৎ, কাউকে আত্মহত্যা করতে উৎসাহ বা উসকানি দেবার মানে হলো, বিষয়টি আত্মহত্যাকারীর বুদ্ধি ও বিবেচনার উপর চাপিয়ে দেয়া। এক্ষেত্রে বাধ্য হয়েও যে একজন নারী আত্মহত্যা করতে পারেন বা কেউ চাঁদনীকের আত্মহত্যা করতে বাধ্য করতে পারে, সেই বিবেচনা কিন্তু আমরা করছি না।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তন্বী স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে স্থানীয় হোটেলে তন্বীর ২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে “নারী নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা: হত্যার সামিল’-শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাড: অলোকানন্দা দাস। সভা পরিচালনা করেন জনউদ্যোগ,খুলনার আহবায়ক এ্যাড: কুদরত-ই-খুদা। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন এ্যাড: মোমিনুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তন্বী স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সমন্বয়কারী আসাদুজ্জামান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নার্গিস ফাতেমা জামিন, এ্যাড: এনায়েত আলী, এ্যাড: মঞ্জুরুল আলম, এ্যাড: আফম মহসীন, বিএম জাফর, তন্বীর মা শামীমা সুলতানা, সুতপা বেদজ্ঞ, শ্যামল সিংহ রায়, মফিদুল ইসলাম, জনার্ধন নান্টু, মনিরুল হক বাচ্চু, টপন কুমার রায়, অধ্যক্ষ এম এ আলম সিদ্দিকী, এ্যাড: অশোক কুমার সাহা, মাহাবুব আলম বাদশা, সাংবাদিক হেদায়েত হোসেন মোল্লা, মহেন্দ্র নাথ সেন, মো: মাকসুদ, নীপা মোনালিসা,নূর মোহাম্মদ মোড়ল, সেলিম বুলবুল, এস এম ফারুক-উল-ইসলাম শাহ মামুনর রহমান তুহিন, আফজাল হোসেন রাজু, সিলভী হারুণ, মনিরা সুলতানা, রসু আক্তার, এ্যাড: পপী ব্যনার্জী, রিজিয়া পারভীন, হোসনে আরা, জেসমিন জামান, মনির আহমেদ, ইসরাত আরা হীরা, দীপক কুমার দে প্রমুখ।