দেশে করোনায় মৃত্যু ৪ হাজার ছাড়ালো

0
178

খুলনাটাইমস: দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ২৮ জনের। চলতি মাসে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৯৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯১৭ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত একজনের মৃত্যুর খবর জানায় সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এরপর থেকেই পর্যাক্রমে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত মার্চ মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল মোট ৫১ জন এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ জনের। এপ্রিল মাসে মোট আক্রান্ত হয় সাত হাজার ৬১৬ জন এবং মৃত্যু হয় ১৬৩ জনের। মে মাসে আক্রান্ত হয় ৩৯ হাজার ৪৮৬ জন এবং মৃত্যু হয় ৪৮২ জনের। জুনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ৯৮ হাজার ৩৩০ জন এবং মৃত্যু ১ হাজার ১৯৭ জনের। জুলাই আক্রান্ত ৯২ হাজার ১৭৮ জন আর মৃত্যু এক হাজার ২৬৪ জন। চলতি মাসে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৯৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯১৭ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে ১৮ মার্চ প্রথম জনের মৃত্যু হয়। পরে গত ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০২ জনে দাঁড়ায়। ২৫ মে একদিনে ২১ জনের মৃত্যু হলে মৃতের সংখ্যা ৫০০ অতিক্রম করে। প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ১০ জুন মৃত্যুর সেই সংখ্যা এক হাজার ১২ জন হয়। ২২ জুন একদিনে ৩৮ জনের মৃত্যু মোট মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৫০২ জনে। এরপরে ৫ জুলাই একদিনে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ৫২ জনে। ১২ দিন পরে ১৭ জুলাই আরও ৫১ জনের মৃত্যু হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ৫৪৭ জনে। গত ২৮ জুলাই একদিনে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার জনের। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২৮ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের অধিক। জানা যায়, দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ২৮ জনের এদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ অর্থাৎ ৩ হাজার ১৬৯ জন পুরুষ ও নারী ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ অর্থাৎ ৮৫৯ কজন। মৃত্যুদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের মুত্যু সবচেয়ে বেশি এক হাজার ৯৭৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এক হাজার ১১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫৩৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৫০ জন, ২১ থেকে ৩০ বছের মধ্যে ৯৬ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, শূণ্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৯ জন রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞতিতে জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫৪৫ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬২৮ জনে। এছাড়া ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ এ দিনে সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৮৮১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৬ জন। গত সোমবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪২ জন মারা গেছেন। আর ১৩ হাজার ৩৮২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৪৮৫ জনের মধ্যে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন দুই কোটি ৩৮ লাখের ২৯ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আট লাখ ১৭ হাজার। তবে এক কোটি ৬৪ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।