নিজস্ব প্রতিবেদক : সাইক্লিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আমাদের খুলনা শহরে। আমাদের ছেলে মেয়েরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কেউ কাজের তাগিদে কেউবা পড়াশুনার খাতিরে। এর মধ্যে অনেকেই সাইক্লিং করে তাদের গন্তব্যে যাতায়াত করছেন। এতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে না তেমনি স্বাস্থ্য ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। অনেকে আবার সাইকেল নিয়ে দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সারা দেশ। দেশের বাহিরেও যাচ্ছেন তারা।
এরই পরিক্রমায় ক’দিন আগে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যানবাহন চলাচলের রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে দেশের প্রথম নারী সাইক্লিস্ট হিসেবে নিজের নাম লিখলেন আমাদের খুলনার মেয়ে জিনিয়া তাবাস্সুম। ভারতের হিমাচল প্রদেশের মানালি থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের লেহ লাদাখ পেরিয়ে খারদুংলা পর্যন্ত ৫১০+ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এর মধ্যে পার হন ৬টি মাউন্টেইন পাস। এই গুলো হলো রোথাং পাস, বারালাচা পাস, নাকিলা পাস, লাচুংলা পাস, তাংলাংলা পাস এবং খারদুংলা পাস।
খুলনা থাকাকালীন খুলনা সাইক্লিস্টস এর হয়ে নিয়মিত সাইকেল চালিয়েছেন তিনি। খুলনায় সাইক্লিংকে সবার মধ্যে জনপ্রিয় করার জন্য কাজ করেছেন তিনি। কাজের সুবাদে বর্তমানে ঢাকায় থাকেন তিনি। সেখানকার সাইক্লিং গ্র“প হেমন্ত রাইডারর্সের হয়ে তিনি এই সাইক্লিং এক্সপেডিশনে যান। সঙ্গে ছিলেন একই গ্র“পের মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান ফিলিপ। মানালি থেকে যোগ দেন সুইস নাগরিক এরউইন।
তিনি মানালি থেকে যাত্রা শুরু করেন ১০ আগস্ট ২০১৮। চালিয়েছেন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭/১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় সাইকেল। বন্ধুর এই পথে টানা ১৭/২২ কিলোমিটার অপহিলে উঠতে হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতা, ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে লক্ষে পৌঁছানোর চেষ্টা করে লক্ষে পৌঁছুছেন তিনি। যাত্রার ২য় দিনেই পড়েন জ্বরে। এই জ্বর নিয়েই শেষ করেন তার এই এক্সপেডিশন। মাঝে একদিন বিশ্রাম ও একদিন বিশেষ অনুমতি সহ ১৩ দিন লাগে তার খারদুংলা পৌঁছাতে।
এই পথ পেরোতে প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ উপভোগ করেছেন তিনি। কিছু পর পর পাহাড়ের রং বদল, ঝর্ণা, পথের পাশ দিয়ে কল কল করে বয়ে যাওয়া নদীর সৌন্দর্যে কষ্টগুলো ভুলে যেতেন তিনি। এর আগে তাবাস্সুম বাংলাবান্ধা থেকে টেকনাফ, দর্শনা থেকে আখাউড়া, হালুয়াঘাট থেকে কুয়াকাটা এবং ভোমরা থেকে তামাবিল এই ক্রস কান্ট্রি গুলো সম্পন্ন করেন। তিনটি পার্বত্য জেলাতেও সাইকেল চালিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও দলগত ভাবে এবং একা অনেক রাইড দিয়েছেন তিনি।
