দেবহাটা ম্যানগ্রোভ বনের সুনাম ক্ষুন্নের ষড়যন্ত্রে মেতেছে একটি চক্র :ষড়ন্ত্রের শিকার ম্যানেজার দিপঙ্কর!

0
398

দেবহাটা প্রতিনিধি : বাংলাদেশ – ভারতের সিমান্তবর্তী নদী ইছামতির কোলে সুন্দরবনের আদলে গড়ে ওঠা রূপসী ম্যানগ্রোভ থেকে সুযোগ সুবিধা না পেয়ে ষড়যন্ত্রে মেতেছে একটি চক্র। মিথ্যা অপবাদে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এ ম্যানগ্রোভ বনের রক্ষনাবেক্ষনের দয়িত্বে থাকা ম্যানেজার দিপঙ্কর ঘোষকে। ম্যানগ্রোভ বনের রক্ষনাবেক্ষনের দয়িত্বে থাকা ম্যানেজার দিপঙ্কর ঘোষ সুত্রে জানাযায়, উপজেলার প্রশাসন এবং স্থানীয় বিশেষ কিছু ব্যক্তির প্রচেষ্টায় প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষার জন্য প্রাথমিক ভাবে ১০একরের মত জায়গা জুড়ে তৈরী এই ম্যানগ্রোভ বন। কয়েক বছর যেতে না যেতে বৃদ্ধি পেতে থাকে বনের পরিধি ও সৌন্দর্য। আর নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পায় এই এলাকার মানুষ। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে ছুটে আসে প্রকৃতির এই দৃশ্য। সেই সাথে চলে ধুমধাম চড়ুই-ভাতি । শীতের প্রথম থেকেই শুরু হয় বনভোজনের উৎসব। কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে উৎসবের আমেজ। অল্পদিনে এই স্থানটি অতিজনপ্রিয় হয়ে ওঠায় নজর আসে স্থানীয় কিছু অসাধু কুচক্রী ব্যক্তির। আর এ সব কারনে এই স্থানটির কতৃত্ব নিজেদের দখলে রেখে নানাঅপকর্ম চালানোর পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা। তারা সময়ে অসময়ে মরিয়া হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগের পায়তারায় লিপ্ত। তাতে কোন সুফল না পুন:রায় শুরু হয় দিপঙ্করের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এরপর কৌশলে ম্যানেজারকে ব্লাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চাপ দিতে থাকে চক্রটি। ম্যানেজার উপায় না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন। এদিকে, ম্যানগ্রোভের জমি স্থানীয় একটি চক্র দখল করে রাখায় সেটি উপজেলা প্রশাসন অবমুক্ত করেন। এতে আরো ক্ষেপে যায় ঐ চক্র। উপায় না পেয়ে সংবাদ প্রকাশ ও সংবাদ সম্মেলন করে ঐ চক্রের সদস্যরা। পরে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগীতায় ঐ চক্রের সদস্যরা। বিভিন্ন সময়ে ম্যানেজারকে ভয় দেখিয়ে তাদের নিজেদের স্বর্থ কায়েম করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয় এ চক্র। সাম্প্রতিক স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদকের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজী করতে যায় এ চক্র। পরে বিষয়টি ঐ সম্পাদকের নজরে আসলে তাদের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট পত্রিকার কর্তৃপক্ষ। এতে পরদিন ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের ম্যানেজারকে বিভিন্ন ভয়ভিতি দেখিয়ে ব্যার্থ হয়ে একটি মনগড়া সংবাদ তৈরী করে নিয়ে পর্যটন কেন্দ্রে হাজির হয় চক্রের ৩জন সদস্য হলুদ সাংবাদিক উত্তর সখিপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মিনুর ছেলে মাহমুদুল হাসান শাওন, তার চাচা মোমিনুর রহমান এবং পাঁচপোতা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে কবির হোসেন। এসময় ম্যানেজারের কাছে মোটা অংকের টাকার চাঁদাদাবি করা হয়। তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় পরদিন ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে মনগড়া ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করা হয়। আর তার প্রভাব পড়ে পর্যটন কেন্দ্রের উপর। এতে পর্যটক হ্রাস পেতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে পর্যটন কে›দ্রের একটি সুত্র থেকে। তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১০-১১ সালে বহু প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে দেবহাটার শিবনগরে ইছামতি নদীর ভাঙন কবলিত নোম্যান্স ল্যান্ড রক্ষা, জীববৈচিত্রের অভায়ারন্য ও বিনোদন কেন্দ্র সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারী চরভরাটি কয়েকশ বিঘা সম্পত্তিতে দখলদারদের উচ্ছেদ পরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রটি স্থাপন শুরু করা হয়। যার মধ্যে বনাঞ্চল ছাড়াও রয়েছে প্রায় একুশ বিঘা জমির একটি লেক ও আশপাশে রয়েছে আরো কয়েকটি মৎস্য চাষ যোগ্য মাঝারি ও বড় আকারের বিস্তৃর্ন ঘের। ২০১৭-১৮ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ-আল-আসাদ থাকাকালীন ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের দেখাশুনার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় মৃত তারাদাশ ঘোষের ছেলে দিপঙ্কর ঘোষকে। এরপর থেকে পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে শুরু হয় পর্যটন বান্ধব পরিবেশ। ম্যানগ্রোভের টিকিট বিক্রয়, মৎস্যঘের ইজারাসহ সকল আয়-ব্যায় সচ্ছতার সাথে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হতে থাকে। অন্যদিকে কুচক্রিয় মহলের সদস্যরা মাছ না পেয়ে ছিপে কামড় দিতে শুরু করেছে। এছাড়া ম্যানগ্রোভের যোগাযোগের জন্য নির্মিত নতুন কার্পেটিং রাস্তার পাশে একটি মন্দিরের সানসেড গাড়ি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার বিষয় নিয়ে ম্যানেজার কথা বললে স্থানীয় আরেকটি চক্রের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এরপর বিভিন্ন চক্রের সদস্যরা এক হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। বর্তমানে ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের সুনাম নষ্ট করে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে মরিয়া একটি চক্র। তাই এই চক্রের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা না গেলে দ্রুত সময়ে পর্যটন কেন্দ্রটি স্লান হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন সচেতন মহল। ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষনে থাকা ম্যানেজার দিপঙ্কর ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পর্যটন কেন্দ্রটিতে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছে। একই সাথে উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত ভাবে সংগ্রহৃত টিকিট বিক্রয়ের টাকা সহ সকল আয় ব্যাংকের মাধ্যমে রাজস্ব খ্যাতে জমা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে যারা ছিলেন তাদের থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি অবৈধ সুবিধা নিয়ে আসছিল। কিন্তু আমি আসায় সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধারাবাহিক ভাবে উন্নয়ন চলমান রয়েছে। আমি আসার পর থেকে আয় ব্যায়ের হিসাব ও লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হচ্ছে। বর্তমানে রূপসী ম্যানগ্রোভে আসা দর্শাণার্থীরা মুগ্ধ হচ্ছেন। তাই এই উন্নয়ন শিল্পকে নিয়ে কাউকে ষড়যন্ত্র করতে দেওয়া হবে না। সব মিলে দেবহাটা তথা জেলার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রটি ষড়যন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করে আরো অধুনিকায়ন করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলাবাসী।