দেবহাটায় ২মাস অতিবাহিত হলেও ইজারা টাকা বুঝে না দিয়ে চলছে খাজনা আদায়ের কাজ

0
625

স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটায় ২মাস অতিবাহিত হলেও ইজারার সম্পূর্ন টাকা বুঝে না দিয়েই চলছে খাজনা আদায়ের কাজ। হাট-বাজার ইজারায় হ-য- ব- র- ল। অর্ধকোটির বেশি টাকা রাজস্ব হারাতে পারে সরকার। হাট-বাজার ইজারা নীতি মালা অনুযায়ী “ইজারা মূল্য অনুমোদনের ক্ষেত্রে দরপত্র অনুমোদনের ০৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদিত দরদাতাকে জানাইতে হইবে। দরপত্র দাতা অবহিত হইবার ০৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে দরপত্রের সাথে দাখিলকৃত জামানতের ২৫% অর্থ সমন্বয়সহ ইজারার অবশিষ্ট ৭৫% অর্থ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ১৫% ভ্যাট ও ৫% আয়কর পরিশোধ করিতে হইবে। অন্যথায় তাহার দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে ও জামানত বাজেয়াপ্ত হইবে। গৃহীত দরের সম্পূর্ণ টাকা (আয়কর ও ভ্যাটসহ) সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা দেওয়ার পর হাট-বাজারের দখল অনুমোদিত দরপত্র দাতার নিকট নির্ধারিত চুক্তিনামার মাধ্যমে প্রদান করিতে হইবে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দরপত্র সমূহ দাখিলের পরবর্তী ০৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে বাছাইয়ের পর সুপারিশ/ মতামতসহ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ-এর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করিবেন। চেয়ারম্যান,উপজেলা পরিষদ পরবর্তী ০৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদন প্রদান করিবেন”। কিন্ত মানা হচ্ছে না নীতিমালা। হাট-বাজার গুলোর ইজারা কার্যক্রম যেন হ-য-ব-র-ল। নীতিমালা অনুযায়ী হাট- বাজার ইজারা কার্যক্রম বিগত বাংলা সনের চৈত্র মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও সেটা করা হয়নি এ উপজেলায়। ঁপ্রাপ্ত তথ্যে জানাযায়, উপজেলার ১৩টি হাট-বাজারের ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করা হলে প্রথম দিনেই অর্থাৎ গত ইং ০৪ মার্চ বুধবার সকাল ৯টা থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীনের কার্যালয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে দরপত্র দাখিল কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ঐ দিন ১২টি বাজারের বিপরীতে ইজারা গ্রহনে ইচ্ছুক ব্যাক্তিরা ২৬টি দরপত্র দাখিল করেন। পরে বিকাল ৪টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন হাট-বাজার ইজারা কমিটির সদস্য ও দরপত্র দাখিলকারীদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক দরপত্র বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতাদের নির্ধারণ সহ ফলাফল ঘোষণা করেন। সে সময় দরপত্র অনুযায়ী ১৪২৭ সনের জন্য পারুলিয়া পশু হাটটি ৭০ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা, কুলিয়া নতুন বাজার ২ লক্ষ ৬ হাজার ১শত টাকা, কুলিয়া মৎস্য ও রেনু সেড ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ১৯০ টাকা, পারুলিয়া মৎস্য সেড ৩৭ হাজার টাকা, সখিপুর বাজার ৫ লক্ষ টাকা, ঈদগাহ বাজার ১লক্ষ ৯৩ হাজার ২৩০ টাকা, গাজীরহাট বাজার সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা, সুবর্ণাবাদ বাজার ২১ হাজার ৩শ টাকা, দেবহাটা বাজার ৪০ হাজার টাকা, নাংলা বাজার ২৬ হাজার ১৫০ টাকা এবং টাউন শ্রীপুর বাজার ১২ হাজার ১শ টাকা দর দিয়ে দর দাতারা সর্বোচ্চ দর দ্বাতা হিসেবে ইজারা প্রাপ্ত হন। সঠিক নিয়মে ইজারা কার্যক্রম শেষ হলেও টাকা জমার ক্ষেত্রে হয়েছে হ-য-ব-র-ল। হাট-বাজার ইজারা অনুযায়ী জমা হয়নি ইজারার সম্পূর্ন টাকা। নীতিমালা অনুযায়ী সম্পূর্ন টাকা জমা না হলে ইজারা গ্রহীতার জমানত বাতিলসহ ইজারা বাতিল এবং নতুন করে ইজারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইজারা প্রদান করতে হবে বলে জানাযায়। এ উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত পারুলিয়া পশু হাটটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে ৭০ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা দর দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে ইজারা প্রাপ্ত হন জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব আল-ফেরদাউস আলফা। ইজারা প্রাপ্ত হওয়ার পর জমাদেন ২০ লক্ষ টাকা। নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা মুল্যের সাথে ইজারা প্রাপ্ত হওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে দাখিলকৃত জামানতের ২৫% অর্থ সমন্বয়সহ ইজারার অবশিষ্ট ৭৫% অর্থ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ১৫% ভ্যাট ও ৫% আয়কর জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ৮৮ লক্ষ ৪৬ হাজার ২শত পঞ্চাশ টাকার বিপরীতে তিনি ৪৫ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে খাজনা আদায়ের কাজ। জনমনে প্রশ্ন কি ভাবে আদায় করছে এই খাজনা? যেখানে জামানত ও ইজারা বাতিল হওয়ার কথা সেখানে কিভাবে চালাচ্ছে খাজনা আদায়ের কাজ? না কি এটা প্রভাব শালীর ক্ষমতার দাপট? এ ব্যাপারে পারুলিয়া পশু হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব আল-ফেরদাউস আলফা বলেন, করোনার কারনে আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছিলাম। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন করোনা পরিস্থিতির কারনে ৩০ মে পর্যন্ত ভুমি মন্ত্রালয় সময় দিয়েছিল উল্লেখ করে জানান, বিষয়টি নিয়ে সোমবার সভা আহব্বান করা হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ সময় সীমা ৩০ মে শেষ হলেও এখনো কেন পরিশোধ হয়নি হাট-বাজার ইজারার রাজস্বের টাকা। এ অনিয়মের জন্য জামানত বাজেয়াপ্তসহ ইজারা বাতিল ও অবৈধ ভাবে খাজনা আদায়ের শাস্তির দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল।