দেবহাটায় হেযবুত তওহীদের আলোচনা সভা

0
98

দেবহাটা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলা হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘গুজব হুজুগ সন্ত্রাস নয়, উন্নয়ন হোক দেশময়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গুজব, হুজুগ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে জাগরণ সৃষ্টিতে আমাদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দেবহাটা প্রেস ক্লাবের হল রুমে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেবহাটার সকল গণমাধ্যম কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
হেযবুত তওহীদের দেবহাটা উপজেলা সভাপতি মোসলেম আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি এস এম নুর আলম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুর রব লিটু, হেযবুত তওহীদের সাতক্ষীরা সদর থানা সভাপতি কামরুজ্জামান শামীম, কালীগঞ্জ থানা সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম, পাটকেলঘাটা থানা সভাপতি রেজাউল বিশ্বাস, তালা উপজেলা সভাপতি আজহারুল ইসলাম রঞ্জু, জেলা মহিলা সম্পাদিকা অনিকা বুশরা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে নেতিবাচক গুজব আমাদের সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর ফলে মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।ধর্মান্ধতা, অন্যায়, শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পরও আমরা গুজব ও হুজুগের তান্ডব দেখতে পাচ্ছি। বিগত দিনে আমরা বারবার গুজব রটিয়ে হামলা, হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাসের তান্ডবলীলা দেখেছি। কোরআন অবমাননা, রসুলকে অসম্মান করা ইত্যাদি নানা প্রকার গুজব ফেবসুকে ছড়িয়ে দিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের শত শত বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব প্রতিরোধে এখনই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষের মধ্যে সুস্থ চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। যাতে ধর্মব্যবসায়ী যেসব শ্রেণি গুজব ছড়ায়, তারা তাদের প্রভাবিত করতে না পারে।
তেমনই এক গুজবের ফলে ৭ বছর আগে নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে সৃষ্টি হয় এক ধ্বংসযজ্ঞ। ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীতে গুজব রটিয়ে, মসজিদকে গীর্জা নির্মাণ আখ্যা দিয়ে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে হত্যার বিবরণ তুলে ধরে প্রধান অতিথি বলেন, সেদিন নির্মাণাধীন মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে দিয়ে, মিথ্যা হ্যান্ডবিল বিলি করে ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা হামলা চালায়। দুজন সদস্যকে প্রচ- প্রহারের পর তাদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের চোখ উপড়ে নেয়। তারপর গরু জবাই করা ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়। পেট্রোল ঢেলে তাদের দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার আগে থেকেই সেই স্থানীয় স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল ও ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে উদ্যোগ নিলে এই মর্মান্তিক নজিরবিহীন এ ঘটনাটি ঘটত না। এই ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। বহু আসামী আইনের আওতায় আসেনি, যারা এসেছে তারা রাজনৈতিক হয়রানীর ধুয়া তুলে সহজেই জামিনে বেরিয়ে এসে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, তারা আবারও হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যাচার চালাচ্ছে ও হামলার উসকানি দেওয়া আরম্ভ করেছে। বিশেষ করে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিরাজমান শান্তিময় পরিস্থিতিকে অশান্ত করে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারকারী ও হামলার চক্রান্তকারী কুচক্রী মহলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে এখনই আইনী শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এরা যে কোনো ধরনের তা-ব সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে কেবল হেযবুত তওহীদই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমাজ, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।