দেবহাটায় জুয়েল হত্যা নিয়ে নানা গুঞ্জন : রহস্য উৎঘাটনে ব্যস্ত পুলিশ

0
324

আব্দুর রব লিটু, দেবহাটা: সাতক্ষীরার দেবহাটায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত আশিক হাসান জুলেল (৩৫) হত্যার রহস্য নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা গুঞ্জন। কি হতে পারে হত্যার রহস্য,আর কারা এ হত্যার সাথে জড়িত এ রহস্য উৎঘাটনে দিনভর ব্যস্তÍ পুলিশ।
জুয়েলের মা চায়না খাতুনের বরাত দিয়ে জানা যায়, বুধবার এশার নামাজের সময় ২জন যুবক মোটরসাইকেলে এসে জুয়েলের খোঁজ করেন। তবে কারা তা চিনতে পারেনি তার মা। কে ছিল এই দুই মোটর সাইকেল আরোহী। এসব সূত্র ধরে ব্যস্ত সময় পার করছে পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ। এসময় জুয়েলের বাড়িতে কর্মরত ২ কর্মচারী এবং তার আর এক সহযোগী ইমরোজ সহ ৪ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসার জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এছাড়া নিহতের বাড়ির সকল মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ। তবে নিহতের কাছে থাকা মোবাইল এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে এলাকায় গুঞ্জন উঠেছে পারিবারিক অশান্তি কাটাতে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়েন জুয়েল। দিন ও রাতের অধিকাংশ সময় কাটত বাড়ির ভিতরে। সন্ধ্যার পর থেকে দীর্ঘ সময় কাটাতেন পুকুর পাড়ে। আর সেখানে বসে লোক মারফত মাদক আনা নেওয়া করাতেন। তার সাথে সঙ্গ দেওয়ার মত আরো অনেকে ছিল বলেও তথ্য বেরিয়ে আসছে। তবে জুয়েল ছাড়া বাড়িতে কোন পুরুষ না থাকায় ঐ বাড়িতে মানুষের আনাগোনা ছিল খুবই কম। আর তাই মাদক সংক্রান্ত কোন জেরে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হতে পারে জুয়েল বলেও অনেকে ধারনা করছেন। এদিকে, জুয়েলের বাড়ির কাজের মহিলাকে প্রায় ১০ দিন আগে হঠাৎ তার স্বামী এসে নিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি ভিন্ন নজরে দেখছে অনেকে। সবার ধারনা পারিবারিক সমস্যার কারনে স্ত্রীর সাথে ডির্ভোস হওয়া কাজের মহিলার সাথে কোন অবৈধ সম্পর্র্ক থাকতেও পারে।এছাড়া আরো অনেক সুুত্র ঘুরপাক খাচ্ছে এই হত্যা কান্ডের বিষয়ে। তবে হত্যার শিকার জুয়েলের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইনীয় প্রক্রিয়া শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে জানা যায়।
এছাড়া জুয়েলের পরিবার অগাধ সম্পত্তির মালিক হওয়ায় সে উগ্র মেজাজ প্রকৃতির ছিল বলে জানান এলাকাবাসী । তার পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মধ্যে দাদা, বাবা ও চাচা মারা গেছেন। অঢেল এই সম্পত্তির ওয়ারেশ হিসাবে জুয়েল ও তার ভাই রাজু একমাত্র অধিকারী। চাকুরির সুবাধে তার ভাই ঢাকায় বসবাস করেন, আর তিনি বাড়িতে থাকতেন। পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি তিনি নিজেই দেখভাল করছিলেন। কয়েক মাস পূর্বে সম্পত্তি বিক্রি করে দুই ভাই ২টি নতুন মডেলের বিলাস বহুল প্রাইভেটকার ক্রয় করে। এছাড়া বেশ কিছু আগে তার মায়ের সাথে ঝগড়া হওয়ায় সেখান থেকে সে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে কাজের লোক দিয়ে হোটেল থেকে খাবার এনে খাওয়া দাওয়া করত জুয়েল।
উল্লেখ্য যে, গত বুধবার (২জুন) নিজ বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে বসে থাকা অবস্থায় খুন হন দেবহাটা উপজেলা সদরের জুয়েল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবক।
দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নিহতের লাশ উদ্ধার করেছি। লাশের মাথার কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের কাটা দাগ রয়েছে। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হবে। এঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।