দূতাবাস উদ্বোধন উপলক্ষে জেরুজালেমে ইভাঙ্কা-কুশনার

0
542

আর্ন্তজাতিক ডেস্কঃ
ফিলিস্তিনিদের প্রবল বিরোধিতা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মত উপেক্ষা করে সোমবার জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে যুক্তরাষ্ট্র।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প সশরীরে উপস্থিত থাকছেন না, ভিডিও লিঙ্কে তিনি বক্তব্য রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে থাকছেন ইভাঙ্কা-কুশনার দম্পতি, যারা দুজনই হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মুচিন ও উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন সুলিভানও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। কুশনার রোববার বিকালেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বলে স্থানীয় সংবামমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইসরায়েলে ইইউভুক্ত অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রদূতই জেরুজালেমের এই অনুষ্ঠান বর্জন করছেন।

তবে হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও চেক রিপাবলিকসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুয়েতেমালা ও প্যারাগুয়ের প্রেসিডেন্টদেরও অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর এই দুই দেশও তাদের রাজধানী জেরুজালেমে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস উদ্বোধন তাদের জন্য উদযাপনের একটি বিষয়। অপরদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একে বর্ণনা করেছেন মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রচেষ্টার ওপর ‘শতকের সবচেয়ে বড় আঘাত’ হিসেবে।

ফ্রান্স, তুরস্ক, সৌদি আরবসহ অনেক মিত্র দেশের আহ্বান উপেক্ষা করে গত সেপ্টেম্বরে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে দূতাবাস স্থানান্তরের কাজ শুরুর নির্দেশ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। এরপর কয়েক মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অনেক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র নগরী জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে চায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ই। ইসরায়েল বরাবরই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করে আসছে। অন্যদিকে ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলিদের দখলে যাওয়া পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করতে চান ফিলিস্তিনি নেতারা।

কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে জেরুজালেমের বিষয়টি। পবিত্র ওই নগরীর ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। ১৯৯৩ সালের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চুক্তি অনুযায়ী জেরুজালেমের পরিচয় কী হবে তার সুরাহা শান্তি আলোচনায় ঠিক হওয়ার কথা।

বিষয়টি নিয়ে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প।

এখন ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীর সঙ্গে মিলিয়ে নিতে জেরুজালেমে দূতাবাস উদ্বোধন এগিয়ে আনা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান কনস্যুলেট ভবনে স্বল্প পরিসরে দূতাবাস উদ্বোধন হবে। পরে তেল আবিব থেকে দূতাবাসের বাকি কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার সময় জেরুজালেমেও দূতাবাসের বড় স্থাপনা দেখা যাবে।