দুর্নীতির মামলায় সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

0
467

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া গাজীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অসহায় ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র চাল আত্মসাতের ঘটনায় দায়েরকৃত দুর্নীতি মামলায় জিয়া গাজীকে এ বরখাস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ অধিশাখার এক প্রজ্ঞাপনে এ বরখাস্তাদেশ দেওয়া হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত আদেশের অনুলিপি খুলনার জেলা প্রশাসক, দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান জিয়া গাজীকেও দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ঈদুল আযহা উপলক্ষে অসহায় ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র ১৫০ বস্তা চাল আত্মসাতের ঘটনায় জিয়া গাজীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান জিয়া গাজীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় চার্জশিট গৃহিত হয়েছে। এ কারণে তার মাধ্যমে ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। এছাড়া ওই ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থি বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩৪ উপধারা (১) অনুযায়ী ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া গাজীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে বিতরণের জন্য সেনহাটি ইউনিয়নে মোট ৫২ দশমিক ২২০ মেট্টিক টন (১ হাজার ৪০ বস্তা) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমানের নির্দেশে ফুলতলা উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর এ চাল উত্তোলন করা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর চালগুলো বিতরণের কথা ছিলো। সে অনুযায়ী উপজেলা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকর্তা (ইউনিয়ন ট্যাগ অফিসার) সমীর বিশ্বাস চালের হিসেব দেখতে চাইলে চাল কম থাকার বিষয়টি ফাঁস হয়।
খবর পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষ্ণুপদ পাল ও উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তা (পিআইও) আনিসুর রহমান গোডাউনে হিসাব করে ১৫০ বস্তা চাল কম পান। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউন সিলগালা করা হয়। বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় তড়িঘড়ি করে বাইরে থেকে চাল এনে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করলে ইউপি ঘাট থেকে পুলিশ ১৫০ বস্তা চাল জব্দ করে।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ এনে ওইদিন রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনার উপ-পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় চেয়ারম্যান জিয়া গাজীকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ৩০ মে দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক মাহাতাব উদ্দীন আহমেদ খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ‘চ’ অঞ্চলে চার্জশিট দাখিল করেন।