দুধের বাজারে সংকট

0
467

চাহিদা পূরণে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
পরীক্ষাগারে সমীক্ষায় অ্যান্টিবায়োটিক ও সিসা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাস্তুরিত তরল দুধের উৎপাদন ও বিপণন পাঁচ সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশের পর বড় বড় দোকানে পাস্তুরিত তরল দুধ বিক্রি হচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন ১৪টি কম্পানি এ পণ্যের বিপণন বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় সংকটে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা। কিন্তু শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্যই দুধ জরুরি। তাই ভোক্তারা মোড়কজাত দেশি-বিদেশি গুঁড়া দুধের দিকে ঝুঁকেছে। তবে সেটাও যে ক্ষতিকর উপাদান থেকে মুক্ত, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। বেশ কয়েক বছর আগে গুঁড়া দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মেলানিন পাওয়া গিয়েছিল। সে কারণে এর চাহিদা কমে গিয়েছিল। এখন তরল দুধে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া ও হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে আবার এর চাহিদা বাড়ছে।
অন্যদিকে হাইকোর্টের নির্দেশ বড় বড় দোকান ও সুপারশপে মানা হলেও, নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কম্পানিগুলো বিতরণ বন্ধ রাখলেও রাজধানীর পাড়া-মহল্লার দোকানিরা এ নির্দেশ মানতে তেমন ইচ্ছুক নন। তাঁরা স্টক ছেড়ে দিতে চান। সংবাদমাধ্যেমে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশের পরও নিষেধাজ্ঞাভুক্ত দেশি কম্পানির পাস্তুরিত তরল দুধ বিক্রি করছেন ঢাকার দোকানিরা। তাঁরা বলছেন, তরল দুধ বিক্রি বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনো নির্দেশনা নেই। দুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন নাকি বলেছে, আগে সরবরাহ করা দুধ বিক্রি করা যাবে। তবে বড় দোকানে বা সুপারশপে গত রবিবার থেকে কোনো ধরনের তরল দুধ বিক্রি হচ্ছে না। আদালতের নির্দেশের পরই সব ধরনের তরল দুধ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ তরল দুধ বিক্রি বন্ধ হওয়ায় ভোক্তারা বিপাকে পড়েছে। বিকল্প নেই বলে অনেকে বেশি দাম দিয়ে মোড়কজাত বিদেশি গুঁড়া দুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছে। দেশি গুঁড়া দুধও বিক্রি হচ্ছে, তবে পরিমাণে কম। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার দুধ প্রয়োজন। প্রয়োজন মেটাতে ভোক্তাদের এখন গুঁড়া দুধে ভরসা করতে হচ্ছে।
দুধের এ সংকটের দায় কার? অবশ্যই এ দায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের এবং উৎপাদিত দুধের মান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর। দেশে কোনো পণ্যই ভেজালমুক্ত নয়; দুধও নয়। তবু দুধ নিয়ে চিন্তা বেশি হওয়ার কারণ, এটি শিশুদের জন্য অতি জরুরি। তারা যদি ভেজালের শিকার হয়, তাহলে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে বৈকি। অভিভাবকদের, ভোক্তাদের দুশ্চিন্তার কারণ দূর করতে শিশুখাদ্যের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগে সক্রিয় হতে হবে; অন্যান্য খাদ্যের ভেজাল দূর করতেও তাদের তৎপর হতে হবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুধ ও অন্যান্য পণের মান নিশ্চিতকরণে তৎপর হবে।