দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ড.কামাল আগেও একবার মাঠে নেমে সরে দাঁড়ান

0
499

খুলনাটাইমস রিপোর্ট : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন আগেও একবার মাঠে নেমে সরে দাঁড়ান। সোমবার সকালে রাজধানীর পল্টনের মুক্তিভবনে ‘দ্বিদলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলো’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিএনপিসহ ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ নামে একটি জোট গড়ার আলোচনা হচ্ছে। এই ঐক্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন ২০০৬ সালেও হাওয়া ভবনের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একই কথা বলেছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এবং দরকার হলে শয়তানের সঙ্গে হাত মেলাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরে তা আর হয়নি। আমরা এই জোট করি না।’

ঐক্য প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে সিপিবি সভাপতি বলেন, তাঁরা শুধু অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দাবি উত্থাপন করেননি। তাঁরা বিএনপির সঙ্গে জোট প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করেছেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের নাগরিক সমাবেশ নিয়ে এই নেতা বলেন, হেফাজতের ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক সেই সমাবেশে অংশ নেন, যাঁর নেতৃত্বে ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের সময় সিপিবি অফিসে আগুন দেওয়া হয়।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের শুধু টেবিলে বসে দাবি উত্থাপন না করে রাজপথে নেমে আন্দোলন করার জন্য বলেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা যেসব দাবি করেছে, আমি আশা করব, এই দাবিতে তাঁরা রাজপথে নামবে। প্রেসক্লাব থেকে শহীদ মিনার যাওয়ার পথে দুই ফুট এগিয়ে আবার ফিরে আসবে না।’

সিপিবি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির সঙ্গে কোনো মেরুকরণে যাবে না বলে জানান দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এক দুঃশাসন শেষ হলে আরেক দুঃশাসন এসে পড়ে। তিন দশক ধরে আমরা এই অবস্থায় আছি। এই দুঃশাসনের দুষ্টুচক্র ভাঙতে হবে।’

ফুটবল বিশ্বকাপ চলার সময়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছিলেন, মেসি-রোনালদো পেনাল্টি মিস করলেও শেখ হাসিনা পেনাল্টি মিস করে না। সে প্রসঙ্গ টেনে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে যে এক গজ দূর থেকেই পেনাল্টি কিক করা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে প্রতিপক্ষের গোলে কোনো গোলকিপার থাকবে না। যার ফলে পেনাল্টি মিস হওয়ার কোনো আশঙ্কা তাঁরা দেখছে না।’ সেলিম বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়েই এই দেশের নির্বাচনকে প্রহসন বানিয়েছে।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে সিপিবি নেতা সেলিম বলেন, পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করবেন। এ ছাড়া জানান, প্রয়োজন হলে তাঁরা নির্বাচন বয়কট করতে পারেন, আবার অংশও নিতে পারেন। অংশ নিলে বামজোট ও প্রগতিশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম। সেখানে বলা হয়, সরকার ২০১৪ সালের মতো আরও একটি একতরফা নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। তফসিল ঘোষণার আগে সরকারকে পদত্যাগ করে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠনের দাবিও জানানো হয়। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮–এর সমালোচনা করে বলা হয়, মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

৫ অক্টোবর বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ, সহসাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন প্রমুখ।