দাকোপ ইউএনওর হাজিরে বন্ধ বাল্যবিবাহ, কাজি গ্রেপ্তার

0
829

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
খুলনার দাকোপ উপজেলায় মাদ্রাসা পড়ুয়া এক কিশোরীর(১৪) বাল্যবিবাহের আয়োজন চলছিল। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলার পানখালি ইউনিয়নের পানখালি দক্ষিণপাড়া গ্রামে আকস্মিক বিয়ের আয়োজনে গিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ। পরে কিশোরীর পরিবার ও পাত্রপক্ষের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করেন তিনি। বাল্যবিবাহ দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন ‘কাজি’ হুসাইন আহম্মেদ (৫৬)।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার প্রথম জামাত বিভাগের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার ওই কিশোরীর সঙ্গে এক তরুণের(২০) বিয়ের সকল আয়োজন করেছিল তার (মেয়ে) পিতা। আর হুসাইন আহম্মেদ নামের কাজি দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় সরকার অনুমোদিত কাজি হিসেবে বিয়ে, তালাক ইত্যাদির নিবন্ধন করে আসছিলেন। রাতে তিনি ওই কিশোরীকে বিয়ে দিতে গেলে এলাকাবাসি উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেন। কিশোরীর বাড়িতে আকস্মিক বিয়ের আয়োজনের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন ইউএনও মো. আবদুল ওয়াদুদ। এ সময় পাত্রপাত্রীর অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নেন এবং ঘটনাস্থল থেকে কাজিকে গ্রেপ্তার করেন।

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ইউএনও মো. আবদুল ওয়াদুদ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পাত্রীপক্ষের নিকট থেকে তিন হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। আর কাজিকে সাতদিনের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

দাকোপ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ খুলনাটাইমসকে বলেন, ওই ছাত্রীর পরিবার ভূয়া জন্মসনদ বানিয়ে মেয়েটিকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে বিয়ের আয়োজন করেছিল। আর এই বাল্যবিবাহের কাজে সহায়তা করছিলেন একজন ‘কাজি’। ফোনে বিষয়টি শোনার পর পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে দুই পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়েটি বন্ধ করা হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না বলে কিশোরীর পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কাজির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।