দাকোপে চাঁদা না দেওয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ শ্রমিকের ওপর হামলা

0
1375

আজিজুর রহমান, খুলনাটাইমস :
খুলনার দাকোপ উপজেলায় চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ প্রকল্পের শ্রমিকের ওপর হামলা করেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ রায়ের ছেলে সঞ্জীব রায়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশের দাবী মামলার আসামীরা পলাতক রয়েছে। তবে শুক্রবার বিকেলে মামলার অন্তত তিনজন আসামীর সঙ্গে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককের কথা হয়।

পুলিশ ও ভুক্তভোগি পরিবার সুত্রে জানা যায়, চায়না ঠিকাদারের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৩ নম্বর পোল্ডারে বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ কাজ হচ্ছে। এজন্য খাল খনন ও বিভিন্ন জায়গা থেকে এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি সংগ্রহ করে তা নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ২টার দিকে ইউনিয়নের পোদ্দারগঞ্জ সাহেবের আবাদ গ্রামে নির্মাণ কাজের পাশে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে সঞ্জীব রায় ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের কাছে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় খাল খনন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজে বাধা সৃষ্টি করেন তিনি। এরপর উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হওয়ার এক পর্যায়ে সঞ্জীবের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে এক্সেভেটর গাড়িচালক রামিল মোল্লাকে(২৪) আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যায় তিনি। ঘটনাস্থল থেকে রামিলকে উদ্ধার করতে চায়না নাগরিক শিং চ্যাং সেং ও শ্রমিক সাগর গেলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করেন সঞ্জীবের দলবল।

পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা রামিল মোল্লাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা জন্য ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রামিলের শ্বশুর বাদী হয়ে দাকোপ থানায় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ আটজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী মো. মামারুক মির্জা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের ছেলে দলবল নিয়ে খাল খনন কাজের পাশে গিয়ে বাধা ও হুমকি প্রদান করে থাকে। ঘটনার দিনে চাঁদা চাওয়াকে কেন্দ্র করে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপরে হামলা চালায়। এছাড়া চীনা নাগরিকের কাছে থাকা প্রায় এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।

দাকোপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ রায় খুলনাটাইমসকে বলেন, চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকের হাতে তার ছেলেও মারধোরের শিকার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে চীনাদের যোগাযোগ ভাল থাকায় তার ছেলেকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেজন্য সঞ্জীব এলাকা ছেড়ে পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাকোপ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোকাররম হোসেন মুঠোফোনে খুলনাটাইমসকে জানান, চায়না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার দুজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে মামলার প্রধান আসামীসহ অন্যান্য আসামী পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে দাবী করেন ওসি।