দাকোপে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত-১

0
895

আজিজুর রহমান, দাকোপ থেকে :
খুলনার দাকোপ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ আঘাতে প্রায় পাঁচ হাজার দু‘শ ২০টি পরিবারের সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত। এছাড়া অসংখ্য গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। ক্ষতি হয়েছে আমন আবাদ ও সবজি চাষিদের।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী গতকাল শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ উপকূলী এলাকায় বুলবুলের আঘাত হানার কথা থাকলেও আঘাতহানে রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর পাঁচটার দিকে। মধ্যরাত থেকে মূষলধারে বৃষ্টির গতি বেড়ে যায় সঙ্গে দমকা হাওয়া। প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১ হাজার ৭৫৩টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। অসংখ্য ছোট-বড় গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে। গাছচাপা পড়ে সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ দাকোপ গ্রামের প্রমিলা মণ্ডল(৫২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। এদিকে ঘুর্ণিঝড়ের কারণে উপজেলার সব একালার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আজ রোববার ভোর পাঁচটার দিকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রচণ্ড গতির এ ঘূর্ণিঝড় এলাকায় আঘাত হানে। প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে লণ্ডভণ্ড করে দেয় ঘরবাড়ি ও গাছপালা। ঝড়ে কাঁচাঘরসহ টিন শেডের আধাপাকা ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ে ও অনেক ঘরের চাল উড়ে যায়। ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সড়কের মধ্যে গাছ ভেঙে পড়ায় যানবাহনসহ জনসাধারণের চলাচলের বিঘ্ন ঘটে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর আমান আবাদ, ২৫০ হেক্টর সবজি বাগান, ৪২৫টি মৎস্য পুকুর ও ৩১২টি চিংড়ির ঘের ভেসে গেছে।

উপজেলার কৈলাশগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা দীপক রায় বলেন, সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল ঘুর্ণিঝড় বুলবুল শনিবার সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে। তাই এলাকার লোকজন সতর্কভাবে ঝড় অবলোকন করতে থাকে। সন্ধ্যা থেকে সারা রাত মূষলধারে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পরে আজ ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘুর্ণিঝড়টি আঘাত হানে উপকূলী এলাকায়। একটানা প্রায় চার ঘন্টার প্রচণ্ড ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একই কথা বলেন, কামিনীবাসিয়া গ্রামের অমৃত মণ্ডল।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আ. কাদের বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এই ঝড়ে উপজেলার ৫ হাজার ২২০টি পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের তহবিল থেকে ৫০ টন চাল ও দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ খুলনাটাইমসকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৭৫৩টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ ও সবজি চাষিদের। ইউনিয়ন ভিত্তিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।