দাকোপে আদালতের আদেশ অমান্য করে ঘর নির্মাণ

0
501

নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনার দাকোপ উপজেলায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আদেশ অমান্য করে নালিশী জমির ওপর পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। তবে আদেশ না মেনে ঘর নির্মাণের নির্দেশ দেন তিলডাঙা ইউপি চেয়ারম্যান রনজিৎ কুমার মÐল।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার তিলডাঙা ইউনিয়নের গড়খালি গ্রামের মো. মহিদুল সানার ছেলে জাহিদ সানা ঘর নির্মাণের জায়গাটি তাঁর রেকার্ডীয় সম্পত্তি দাবি করে খুলনা বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে অভিযুক্ত করা হয় গড়খালি গ্রামের নূরুজ্জামান সানার ছেলে ইসলাম সানা (৫৮), নজু সানা (৪৬), সাহেব আলী (৩২) ও মৃত. খোরশেদ সানার স্ত্রী ছবি বেগম (৩৩) নামের চারজন ব্যক্তিকে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে নালিশী জমির দখল ভিত্তিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট থানা কর্মকর্তাকে। সে অনুযায়ী পক্ষদ্বয়ের মধ্যে শান্তি ভঙের আশঙ্কা আছে মর্মে নালিশী জমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নোটিশ দেন থানা পুলিশ। তবে আদেশ অমান্য করে নালিশী জমিতে পাকা ঘরের নির্মাণকাজ করেন ছবি বেগম নামের অভিযুক্ত নারী।
ঘর নির্মাণকাজের একজন শ্রমিক ফরিদ হোসেন। তিনি বলেন, সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় ওই গ্রামে ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমে প্রতিদিন তিনজন শ্রমিক মিলে নির্মাণকাজ করছি। দুদিনের মধ্যে ঘরটির সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে।
জানতে চাইলে ছবি বেগম জানান, পূর্বশত্রæতার জেরে মামলার বাদী জাহিদ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এসে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ দেন। কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখার পরে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে আবার নির্মাণকাজ শুরু করেছি। জমির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের জায়গা, এখানে আমি ঘর নির্মাণ করে থাকবো। তবে জমির কোনো কাগজপত্র দেখাতে অপারগতায় প্রকাশ করে ছবি।
নালিশী জমির বিবরণ, জেএল নম্বর ৯, এসএ খতিয়ান নম্বর ৫৫ ও ১২৩, দাগ নম্বর ৭৬, ৭৫, ৭৩, ৭৪, ৮০৪ এবং ৭৬, ৭৫, ৭৪, ৭৩ ও ৮০৪। এখানে মোট ১০ দশমিক ২৯ একরের মধ্যে দশমিক ৯৫ শতক জমি বাদী পক্ষের বলে দাবি করে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসের ছয় তারিখে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নম্বর এমপি ৮৯/২০২০।
মামলার বাদী জাহিদ সানা অভিযোগ করে বলেন, আদালতের দারস্থ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় ওই নারী অকথ্যভাষায় গালিগালাজসহ মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়েই যাচ্ছে।
বসতবাড়ির জমি-জমার কোনো কাগজপত্র নেই বলে জানান মামলার আরো একজন অভিযুক্ত সাহেব আলী। তিনি বলেন, বাপ-দাদারা এখানে বসবাস করত, সেভাবে আমরাও বসবাস করছি। তবে জমির একটি পর্চা (খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি) ছিল, তা অন্য একটি কাজের জন্য জমা দেওয়ায় আমাদের হাতে আর কিছু নেই।
নালিশী জমিতে ঘর নির্মাণকাজের নির্দেশ প্রদানের অভিযোগ অস্বীকার করে তিলডাঙা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রনজিৎ কুমার মÐল বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ছবি বেগম হতদরিদ্র থাকায় এলাকার লোকজনের কথা মতো তার একটি ঘরের জন্য তালিকা পাঠায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেই অনুযায়ী ঘরটি পেয়েছে।
এ বিষয়ে দাকোপ থানার সহকারি উপপরিদর্শক শেখ ইসলাম আলী বলেন, আদালতের নির্দেশক্রমে নোটিশ করা হয়েছে। আগামী ১৭ মে উভয়পক্ষ কাগজপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হবে। এছাড়া অভিযুক্ত নারীকে নালিশী জমিতে ঘর নির্মাণ না করার জন্য বলা হয়েছে কয়েকবার। তবে এখন যদি আদেশ অমান্য করে নির্মাণকাজ করে থাকে তাহলে আদালত আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।