তেরখাদায় চরমপন্থী জয় ও তার স্ত্রী রিনার অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

0
244

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ) রশিদ গ্রুপের সেকন্ডে ইন কমান্ড মাশশিকুল চৌধুরী ওরফে জয় ও তার স্ত্রী তেরখাদা উপজেলার ২নং বারাসাত ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য রিনা বেগমের সীমাহীন অত্যাচারে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ। নিরীহ মানুষের পক্ষে কথা বলায় প্রতিবাদীদের একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখে চরমপন্থী এই পরিবারটি। অতি সম্প্রতি কল্পকাহিনী সাজিয়ে এমনি ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দায়ের করেছে ২নং বারাসাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তেরখাদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তেরখাদা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বারাসাত ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আলমগীর হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে আ’লীগ নেতা হাজী মকবুল হোসেন এসব অভিযোগ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড সদস্য রিনা বেগম আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন ও হয়রানীমূলক মামলা করে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এই রিনা বেগম হলেন, দক্ষিণাঞ্চলের এক সময়ের সন্ত্রাসী জনপদের তৎকালীন পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ) রশিদ গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড মাশশিকুল চৌধুরী জয় এর স্ত্রী। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ প্রার্থীর হয়ে আমার বিরুদ্ধে এহেন অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আর এসব কর্মকান্ডে অর্থের যোগান দিচ্ছে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বচনের সম্ভাব্য প্রার্থী আল-আমিন হোসেন অপুর ভাই তেরখাদা থানা জামায়াতের সাবেক আমীর শারাফাত হোসেন দিপু। দিপুর দাদা ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে পিস কমিটির চেয়ারম্যান। সেই সূত্রে এই পরিবারটি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত।
তিনি আরও বলেন, মহিলা মেম্বর রিনা বেগম পরিষদের আরো ৭জন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বরকে ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে। যা পরবর্তীতে তদন্তে সবই মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। ওই অভিযোগে উল্লেখ করেন আমি নাকি এলজিএসপি’র ৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছি। তার এই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক দপ্তরের সহকারী কমিশনার নুরী তাছমিন উর্মির অফিসে তদন্তের জন্য ২৮ জুলাই সকালে রওনা হই। ৫ জন মেম্বর এবং অভিযোগে উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সকাল সাড়ে ১০টায় জেলখানা ঘাট পৌঁছালে মহিলা মেম্বর রিনা বেগম ও তার স্বামী মাশশিকুল চৌধুরী জয় আমার সাথে থাকা মেম্বরদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। আমরা তাদের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে পৌনে ১১টায় সহকারী কমিশনার নুরী তাছমিন উর্মির অফিসে হাজির হই। ওই তদন্তেও তাদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়। এর আগে গত ২১ জুন আমার বিরুদ্ধে একটি মনগড়া সংবাদ সম্মেলন করে।
তিনি আরও বলেন, একের পর এক মিথ্যা অভিযোগকারী রিনা বেগমকে সহযোগিতা করছে চিহ্নিত ইয়াবা বিক্রেতা ৬নং ইউপি মেম্বর তৌহিদুজ্জামান। এই তৌহিদ ২শ’ পিস ও তার ভাই অরিসুল ইসলাম ১ হাজর ৮শ’ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন। এই তৌহিদ ও তার ভাই অরিসুলের বিরুদ্ধে, মাদক, হত্যা, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগ ১৪টি মামলা রয়েছে। রিনা বেগমের আরো একজন সহযোগী হলেন ৯নং ইউপি মেম্বর আরিফ মোল্লা। যিনি বারাসাত এলাকার ত্রাস। নাশকতা মামলার আসামীসহ পুলিশের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী। অপরদিকে রিনা বেগমের স্বামী মাশশিকুল ইসলাম জয় চাঁদাবাজী, মানুষ হত্যা, পুলিশ হত্যা, নারী ধর্ষনসহ বিভিন্ন অপরাধে একজন পেশাদারী সন্ত্রাসী। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কারনে পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ) কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মাশশিকুল কৌশল পরিবর্তন করে তার পেশা চাঁদাবাজি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার স্ত্রীকে দিয়ে বিভিন্ন সময় আ’লীগের নেতৃবৃন্দ সহ অনেকের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে অথবা এলাকায় কোন সমস্যা তৈরি হলে এসব ক্ষেত্রে সে চাঁদাবাজি করে থাকেন। মাশশিকুল চৌধুরী জয় ডিএসবি’র তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। সে জোড়া পুলিশ হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী ছিল। এছাড়া বিভিন্ন সম্মানী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সে তার স্ত্রীকে দিয়ে অভিযোগ করে অর্থবাণিজ্য করে থাকে। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ট।
এসময় তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওইসব সমাজ বিরোধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী শেখ, আজগড়া ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেনন রায়, আ’লীগ নেতা শেখ রাজা মিয়া, এম ফরিদ আহমেদ, শওকত মোল্লা, কাজী আক্তার হোসেন, শহিদ মোল্লা, বাসিতুল হাবিব প্রিন্স, সবুর সিদ্দিকী, আরিফ হাসান, ফরিদ মোল্লা, সন্তোষ সমাজপতি, বলয় লাল বালা, বাবলু শেখ, শাহাবুদ্দীন, ফরিদ মিনা, মোহাম্মদ আলী মোল্লা, আরিফুজ্জামান অপু, ইউপি মেম্বর বারাসাত জুয়েল বালা, ইকরাম হোসেন, আলমগীর শেখ, হাসিনা বেগম, বিনা রানী বিশ^াস, যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাসিমা কবীর, ছাত্রলীগ নেতা নয়ন লস্কর, কেএম আলিমুল, সোহরাবসহ স্থানীয় দলীয় নেতৃবৃন্দ।