তালায় চা’দোকানির ঘর উচ্ছেদের ঘটনায় মামলা

0
453

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সরকারি নীতিমালা ও বৈধ কাগজ পত্র থাকা স্বত্ত্বেও স্থানীয় একটি স্কুল কতৃপক্ষ তাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে খলিলনগর বাজারের অসহায় চা দোকানি মোঃ কুদ্দুসের দোকান ঘর ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার দোকান মালিক বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট খলিলনগর ইউনিয়ন মাধ্যমিক ুবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজোয়ান উল্লাহ খানসহ ৩ জন শিক্ষকের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নং-পি-১৫৯৫/১৮।

মামলার বিবরণ ও অভিযোগে জানা যায়,তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের প্রসাদপুর গ্রামের মৃত ইউসুফ মোড়লের ছেলে ভূমিহীন অসহায় শ্রমজীবি মোঃ কুদ্দুস মোড়ল স্থানীয় খলিলনগর বাজারে একটি চায়ের দোকান ঘর নির্মাণ করতে খলিলনগর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ১৯৯ দাগের মধ্য থেকে ১৭.৮৩ বর্গ মিটার জায়গার বৈধ বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ চায়ের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিল। চলতি শুষ্ক মৌসুমে বাঁশ-খুঁটির পলিথিনে মোড়ানে ঘরটি সম্প্রতি কুদ্দুস টিনের ছাউনি দেওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী উপরোক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে কতিপয় স্বার্থান্বেসী শিক্ষকরা অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে জায়গাটি বিদ্যালয়ের অন্তভূক্ত দাবি করে ঘরটিতে ভাংচুর চালিয়ে গুড়িয়ে দেয়। সূত্র জানায়,এসময় তারা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরও সম্পৃক্ত করে। বৈধ কাগজ-পত্র থাকা স্বত্ত্বেও জীবিকা নির্বাহের এক মাত্র অবলম্বন চায়ের দোকানটি ভেঙ্গে দেওয়ায় কুদ্দুস পরিবারে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দূর্ভোগ। আয়ের পথ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ দিনই তাদের অভূক্ত কাটাতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।

এদিকে সরকারি সম্পত্তি ইজারা নিয়ে বৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনায় খবর পেয়ে গত বৃস্পতিবার তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে নিশ্চিৎ করেছেন এ কর্মকর্তা নিজেই। প্রসঙ্গত,কুদ্দুস মোড়ল উপরোক্ত তপশীল বর্ণিত দোকান ঘরের জায়গার বৈধ ইজারা পেতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে একটি আবেদন করলে পর্যায়ক্রমে তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২৫ জুন ১৮ ০৫.৪৪.৮৭৯০.২৭.০০৯.১৮-৫৫৮ নং স্বারকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ১১ এপ্রিল ১৮’ তারিখের ৩৯ নং স্মারকে কুদ্দুসের স্বপক্ষে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখা ০৫.৪৪.৮৭০০.০০৬.৩৫.০৩০.১৮-১১১২ নং স্মারকে ১ জুলাই কুদ্দুস মোড়লের পক্ষে ঐ স্থানে বাজারের চান্দিনা লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান ঘর নির্মাণের অনুমতি দেয়। যার চান্দিনা ভিটা ইজারা কেস নং ৭৫/১৭-১৮ এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় ভূমি অফিস আদায়কারী অফিস হিসেবে ইজারার টাকা নিয়ে রশিদ প্রদান করেন,যার বহি নং ৮৬২৬০,পৃষ্টা নং-১২।

এর আগে কুদ্দুস মোড়ল সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের অনুমোদিত ৩২/২০০০ নং খলিলনগর বাজার পেরীফেরীর বন্দোবস্ত উপযোগী জমির মধ্যে ৭৫/১৭-১৮ নং চান্দিনা ভিটার ইজারা অনুমোদন সাপেক্ষে নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট ১৬৫৭৩ নং ডিসিআর এর মাধ্যমে সমুদয় রাজস্ব পরিশোধ করেন।  অথচ এত কিছু বৈধ কাগজ-পত্র ও দীর্ঘ দিনের দখলপূর্বক দোকান চলমান অবস্থায় জোর পূর্বক কোমলমতি শিক্ষার্থীদেও সম্পৃক্ত করে বহিরাগতদের দিয়ে উচ্ছেদের ঘটনায় ভূক্তভোগী কুদ্দুস পরিবারসহ সচেতন এলাকাবাসী এর বিচার দাবি করেছেন। অবিলম্বে তারা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ দখল ফিরিয়ে দিতে স্থানীয় ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজোয়ান উল্লাহর নিকট জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলছেন বলে ফোন কেটে দিলেও পরে আর ফোন ধরেননি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দোকান মালিক মোঃকুদ্দুস মোড়ল বাদি হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাইকগাছা উপজেলার প্রতাপকাটি গ্রামের মৃত জোনাব আলী খানের ছেলে রেজোয়ান খাঁন,শিক্ষক তালার রায়পুর গ্রামের মৃত সুধীর কর্মকারের ছেলে আনন্দ কর্মকার ও খলিলনগর গ্রামের মৃত সূধীর রায়ের ছেলে মুকুন্দ রায়কে প্রত্যক্ষ আসামী করে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের নামে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। যার নং-পি-১৫৯৫/১৮। ধারাঃ ফৌজঃ কাঃ বিঃ ১৪৫।