তালায় কালভার্টের মুখ বেঁধে দেওয়ায় পানের বরজসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

0
590

তালা(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :::

সাতক্ষীরার তালার রায়পুর এলাকায় পানি নিষ্কাশনের একমাত্র কার্লভাটের মুখে বাঁধ দিয়ে আটকে দেয়ায় সীমান্তবর্তী পাইকগাছার কাশিমনগর,রামনগর ও তালার রায়পুর এলাকার বহু পানের বরজ ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না হলে বিস্তীর্ণ এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।

ভূক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগে জানাযায়, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার রায়পুরের একাংশ এবং সীমান্তবর্তী খুলনার পাইকগাছার কাশিমনগর ও রামনগরের একাংশের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ রায়পুরের ঘোষপাড়াস্থ একটি মাত্র কার্লভাট। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে ঐ কার্লভার্ট দিয়েই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশিত হয়ে আসছে। এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে বর্তমান সরকারের সময়ে বছর দু’য়েক আগে সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিকাশ’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কালভার্টটির পুণ:নির্মাণ হয়। তবে চলতি বর্ষা মৌসুমের আগেই স্থানীয় মৃত মনিন্দ্র ঘোষের ছেলে সন্তোষ ঘোষ উক্ত কার্লভাটের মুখে বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় পানি বন্দি হয়ে রয়েছে ঐ এলাকার বহু পানের বরজ ও ফসলের ক্ষেত। জরুরী ভিত্তিতে পানি নিষ্কাষন না হলে পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি সাধনের পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধাতার আশংকা করছেন তারা।

সর্বশেষ গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ঐ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থরা গত ১২ জুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সন্তোষকে বাঁধের অংশ বিশেষ খুলে দেওয়ার জন্য করুণ আকুতি জানালে মানবিক দিক বিবেচনায় সন্তোষ ঘোষ সন্ধ্যার দিকে বাঁধের অংশ বিশেষ কেটে পানি সরানোর ব্যবস্থা করলেও ঘন্টা খানেকের মধ্যে তা ফের বেঁধে দেন। তার অভিযোগ, পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করায় বিষাক্ত পানি পুকুরে ঢুকে তার মাছ মরে ক্ষতিসাধন হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, তার পুকুরের পাড়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ তার শরীকরা গরুর মল-মূত্র স্তুপ করে রাখায় অতিবৃষ্টিতে তা পুকুরের সাথে মিশে মাছ ভাসতে শুরু করে। বাঁধের অংশ বিশেষ কেটে দেওয়ার আগে বিষয়টি সন্তোষসহ এলাকাবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। এরপর বাঁধের মুখ ছেড়ে দিলে মাছ ভাসার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ফের বেঁধে দেন বাঁধটি । তার ধারণা,বাইরের পানিতেই তার মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিকাশ মন্ডল জানান, পানিবন্দিতার বিষয়টি জানার পর তিনি একাধিকবার সন্তোষের সাথে কথা বলেছেন কার্লভাটের মুখ খুলে দিতে। কিন্তু এজন্য তিনি স্থানীয় নানা প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

এব্যাপারে পাশের ঘোষনগর-গঙ্গারামপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রকাশ চন্দ্র দালাল এ প্রতিনিধিকে জানান,রায়পুর ঘোষপাড়ায় কার্লভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ায় তার এলাকার অনেকে যারা ঐএলাকায় পানের বরজসহ চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এছাড়া তার এলাকারও নিন্মাংশের জল নিষ্কাশন হয় ঐ কার্লভাট দিয়ে। এজন্য তিনি যথাযথ কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে সন্তোষ ঘোষ জানান,সে দীর্ঘদিন ধরে দু’টি পুকুরে রুই,কাতলা,মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ করে আসছে। মাছগুলো কিছুদিন পরেই বিক্রি করত। শুক্রবার বিকালে পাইকগাছার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামের লোকজনের চাপে বাঁধের অংশ বিশেষ কেটে পানি সরাতে বাধ্য হন। মাছ মরার জন্য ঐ ঘটনাকে দায়ী করেন তিনি।