ঢাকায় সবকিছুরই লণ্ডভণ্ড অবস্থা

0
303

অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যধারী বাংলাদেশের রাজধানী, আমাদের প্রাণপ্রিয় ঢাকা নগরী শুধু অপরিকল্পিতই নয়, এখানকার সবকিছুরই লণ্ডভণ্ড অবস্থা। ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন নির্বাচিত জনপ্রতিধিদের সদিচ্ছা ও সবার সমন্বিত উদ্যোগ। এজন্য নির্দিষ্ট ছক ও পরিকল্পনা এবং গাইডলাইন তৈরি করে সামনে এগোতে হবে। বর্তমানে এই রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আমেজে সরগরম হয়ে উঠেছে। আমরা আশা করি ঢাকাকে ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা গড়া এবং মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার যে বার্তা এখন প্রার্থীরা দিচ্ছেন, নির্বাচিত হয়ে প্রতিশ্রুতিগুলো তারা মনে রাখবেন। প্রার্থীরা তাদের দায়বদ্ধতা থেকে একটি পরিকল্পিত নগরী নির্মাণের প্রত্যয় ও ঢাকাকে একটি মানবিক শহরে পরিণত করার অঙ্গীকার করবে বলে আমরা আশা করি।
প্রতীক বরাদ্দের পর রাজধানীতে নৌকা-ধানের শীষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জমজমাট প্রচার শুরু করেছেন। প্রচার শেষে ভোট হবে ৩০ জানুয়ারি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ভোটের প্রচারে নামেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টর জামে মসজিদের সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। ঢাকা দক্ষিণে নৌকা প্রতীক পেয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস প্রথম পথসভার মধ্য দিয়ে গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর বাবার কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে প্রথম দিন নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরা রাজধানীতে প্রথম দিন থেকেই ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন।
যেকোনো নির্বাচন পরিচালনার ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ সরকার বা অন্য কেউ করবে না বলে আমা আশা করছি। তবে সব কিছুর আগে প্রয়োজন কমিশনের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সুসমন্বয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হবে। বাংলাদেশে নির্বাচন হয় উৎসবমুখর পরিবেশে। কিন্তু উৎসবের আমেজের মধ্যেই দুঃখজনক ঘটনার অনেক উদাহরণ আছে। আর এসব দিকে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে। কোনো প্রার্থী বিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রার্থীদেরও মনে রাখতে হবে নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে। নির্বাচনের পরিবেশ উৎসবমুখর রাখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদেরও।
সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। জনগণের ভোটে যারাই নির্বাচিত হবেন, আমরা চাই সাধারণের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা।