ডুমুরিয়ায় ভাসুর কর্তৃক যৌণাচারে ব্যর্থ হয়ে ছোট ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিতাড়িত

0
295

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনার ডুমুরিয়ায় মৃত স্বামীর বড় ভাইয়ের বিকৃত যৌণাচারে অতিষ্ঠ পারভীন খাতুন(৩৪) নামে এক বিধবা এবার আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। তার অভিযোগ, ৪ বছর আগে স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর থেকে ভাসুর সাইদুল মোড়ল (৪৫) তার উপর খিপ্র যৌণ কামনা চরিতার্থে ব্যর্থ হয়ে এবং স্বামীর রেখে যাওয়া ধন-সম্পদ আতœসাৎ করতে তার তিন শিশু সন্তানদের আটকে রেখে বাড়ী থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। সন্তানদের হারিয়ে বর্তমানে পাইকগাছার প্রতাপকাটিতে অসহায় পিতার সংসারে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। হুমকির মুখে নিজের সম্ভ্রম রক্ষা ও পিতার রেখে যাওয়া সম্পদ-সম্পত্তিতে সন্তানদের নায্য প্রাপ্তি আদায়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই বিধবা মা’। মামলার বিবরণ ও অভিযোগে জানানো হয়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চাকুন্দিয়া গ্রামের মৃত মফিজুল মোড়লের স্ত্রী পারভীন খাতুন। পারভিনের পিতার বাড়ি পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের প্রতাপকাটি। তার পিতার নাম মো: সায়েম সরদার। ২০০৫ সালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক মফিজুল মোড়লের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে যথাক্রমে ১৩,৮ ও ৬ বছরের দু’কন্যা ও ১ পুত্র রয়েছে। এক পর্যায়ে প্রায় ৪ বছর আগে আকষ্মিক স্বামী মজিদ মৃত্যুবরণ করেন। শুরু হয় সুখের সংসারের ছন্দ পতন। তার অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর কিছু দিন যেতে না যেতেই তার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তারই মৃত স্বামীর আপন ভাই সাইদুল মোড়ল (৪৫) এর। দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন সময় সে তার বিকৃত যৌণকামনা চরিতার্থ করতে রীতিমত উঠে-পড়ে লাগে। সাথে সাথে স্বামীর রেখে যাওয়া সহায়-সম্পত্তিও লুট-পাটে মেতে ওঠে। শুরু হয় তার শিশু সন্তানদের উপরও নির্যাতন। তবে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সব নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর ভিটায় সন্তানদের আঁকড়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে ভাসুরের প্রতিনিয়ত যৌনাচারের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে অর্থাৎ সতীত্ব রক্ষায় পারিবারিক সিদ্ধান্তে অন্যত্র বিয়ে করতে বাধ্য হন তিনি। সেখানেও বিয়ে টেকেনি তার। মাত্র ২২ দিনের মাথায় ভাসুর সাইদুল তাকে নানা কু-প্ররোচনায় প্রলুব্ধ ও দ্বিতীয় স্বামীকে নানাবিধ হুমকি-ধামকি বিশেষ করে ভবিষ্যতে সে তার সাথে এমনকি তার সন্তানদের সাথে ভাল আচরণ করবে শ্বশুর বাড়ির অনুরোধে ফের মৃত স্বামীর ভিটায় চলে যান। কিন্তু এর কিছু দিন যেতেনা যেতেই ভাসুর সাইদুল ফের আগের ন্যায় যৌণবাসনা চরিতার্থ করতে মধ্যরাতে শুরু করে নানা উৎপীড়ন। তার কথা না শুনলে বাচ্চাদেরও সেখানে থাকতে দেবেনা বলে হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি পারভিন তার মা রোকেয়া বেগমকে জানায় এবং গত ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর ফের প্রতাপকাটিতে পিত্রালয়ে চলে আসেন। এর দু’দিন পর ভাসুর সাইদুল ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার পিত্রালয়ের সামনে এসে ভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে ফোনে বাড়ির বাইরে এনে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় সাইদুল তার পরনের শাড়ী, বøাউজ টেনে ছিঁড়ে এক পর্যায়ে উলঙ্গ করে ফেলে। এসময় তার আতœচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সাইদুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এরপর নিজের, সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্যদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত (২০০৩) ১০ ধারা মোতাবেক গত ২৫ অক্টোবর ২০’ বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২, খুলনায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-৭২/২০। এর আগে স্বামীর আরেক বড়ভাই মাহাবুবর রহমান মোড়ল (৬০) ও ইসমাইল সরদার ভিন্ন এলাকায় বসবাস স্বত্তে¡ও স্বামীর রেখে যাওয়া ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেকে ও কাগজপত্রে তার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। একপর্যায়ে সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক বাড়িসহ জিনিষ-পত্রের দখল নেয়। সর্বশেষ সন্তানদের বাড়িতে আটকে রেখে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় সন্তানরা বাঁধা দিলে তারা তাদেরকেও মারপিট ও খুন-যখমের হুমকি দেয়। একপর্যাযে দ্বিতীয় বিয়ে ও ২২ দিনের মাথায় তাকে তালাক করতে বাধ্য হন। এঘটনায় পারভীন পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাইদুল মোড়লকে প্রধান করে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। যার নং-সিআর-৬৪৩/২০।