ডুমুরিয়ায় পারিশ্রমিক না পাওয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ : ধর্মঘটের হুমকি

0
187

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি:
ডুমুরিয়ায় খাদ্য গুদামে কর্মরত শ্রমিকরা এক অটো রাইচ মিল মালিকের নিকট ১৪ মাস পূর্বের তাদের বাড়তি ৩ লক্ষাধিক টাকা ন্যায্য পারিশ্রমিক না পেয়ে ১৮জন শ্রমিক মানবতার জীবন যাপন করে আসছে। এ নিয়ে আন্দোলন, ধর্মঘট করে আজও এর কোন সমাধান পায়নি শ্রমিকরা। আশু মিল মালিক কামরুজ্জামান তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক না দিলে আবারও কাজ বন্ধ করে দিবে বলে জানিয়েছেন তারা। উপজেলা খাদ্য গুদাম ও শ্রমিক সর্দার নিত্য দাস’র সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাই/আগষ্ট মাসে ধান, চাল সংগ্রহ মৌসুমে খাদ্য গুদাম ঘর, গুদাম চত্ত্বর ও গেট সংস্কারের কাজ চলতে থাকে। ফলে গুদামের প্রধান ফটক দিয়ে সরাসরি মাল বোঝাই ট্রাক ভিতরে প্রবেশ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যে কারনে মিল মালিকরা শ্রমিকদের বাড়তি পারিশ্রমিক দিয়ে রাস্তা থেকে মাল খালাস করে গুদামজাত করতো। শ্রমিক সর্দার নিত্য দাস অভিযোগ করে বলেন, রাত দিন মাথায় বস্তা বহন করে সব মিল মালিকের কাছ থেকে ন্যায্য পারিশ্রমিক পেয়েছি। কিন্তু আঠারো মাইল বাজারস্থ এমএ জামান অটো রাইচ মিলের মালিক কামরুজ্জামান বাড়তি পারিশ্রমিক না দেয়ায় আমরা ৩ লক্ষাধিক টাকা তার নিকট পাই। এক পর্যায়ে ওই বাড়তি পারিশ্রমিক না দিতে নানা তালবাহানা শুরু করলে আমরা আন্দোলন ও ধর্মঘটের কর্মসূচী গ্রহন করি। তখন তৎকালিন গুদাম কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস হোসাইন বিষয়টি মিমাংসা ও কাজ গতিশীল রাখার স্বার্থে আমাদের ধৈর্য ধরতে বলেন। এরপর জানতে পারি আমাদের পাওনা টাকা দেয়ার নামে ১লক্ষ টাকা গুদাম কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস হোসাইন’র হাতে তুলে দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। এখন আমাদের কি হবে? আমরা আজও একটি টাকাও পেলাম না। আশু আমাদের ন্যায্য মজুরি না পেলে আবারও ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হবো। ঘটনা প্রসঙ্গে গুদাম কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস হোসাইন জানান, শ্রমিকরা যখন তাদের ন্যায্য মজুরি পেতে আবারও ধর্মঘটের হুমকি দেন, তখন আমি বিষয়টি মিল মালিক কামরুজ্জামান কে একাধিক বার জানানোর পর তিনি চলতি বছরে ৮ জানুয়ারী অফিসে এসে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ ১ লক্ষ টাকা আমার হাতে তুলে দিয়ে ওটাকে ঘুঁষ আখ্যায়িত করে আমাকে ফাঁসিয়ে দেন। এরপর শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা পেয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তাহলে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবে কার কাছে এমন প্রশ্নের জবাবে বর্তমান গুদাম কর্মকর্তা লিটন বিশ্বাস বলেন, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বিষয়ে গুদাম কর্তৃপক্ষের কোন সম্পর্ক নেই। তাদের দেনা পাওনা কামরুজ্জামানের সাথে। শ্রমিকরা আবারও ধর্মঘটে যাবে বলে জানিয়েছে, বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়েছে। শ্রমিকদের দাবিটি সঠিক এমনটি উল্লেখ করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সুজিত কুমার মুখার্জী বলেন, সব মিলাররা শ্রমিকের বাড়তি পারিশ্রমিক পরিশোধ করলেও এমএ জামান অটো রাইচ মিল মালিক কামরুজ্জামান পারিশ্রমিক পরিশোধ না করায় শ্রমিক অসন্তোষ, আন্দোলন, ধর্মঘট সহ নানা ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে জানার জন্য কামরুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।